আলমডাঙ্গায় নির্বাচনি জনসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা
উন্নয়নের জন্য পরিবর্তন চাই : সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নির্বাচনি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার আলমডাঙ্গার এটিম মাঠে ঈগল প্রতীকের এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দুর্নীতিমুক্ত চুয়াডাঙ্গা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দিলীপ কুমার। তিনি উন্নয়নের জন্য পরিবর্তন চান। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তিনি জেলার সার্বিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন। আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র হাসান কাদির গনু মিয়ার সভাপতিত্বে জনসভায় নির্বাচনি আসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য দেন। তারা তাদের বক্তব্যে বিগত আমলে উন্নয়ন ও সুশাসন নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তারা আশা করেন ঈগল প্রতীকের প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বিজয়ী হলে স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়ে উঠবে। সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, চুয়াডাঙ্গাবাসী আজ পরিবর্তন চায়। তারা আর কোনো নির্দিষ্ট পরিবারের গন্ডিতে আটকে থাকতে চায় না। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে উন্নয়ন হলেও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে তার সুফল আসেনি। তাই আমি বিজয়ী হলে এই জেলাকে স্মার্ট চুয়াডাঙ্গায় রূপ দেবো। দিলীপ কুমার আগরওয়ালা আরও বলেন, এই আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গার ধুলো-মাটি আমার গায়ে লেগে আছে। আমি এই জনপথের মাটি ও মানুষের টানে বার বার ছুটে আসি। এই টানই আমাকে নামিয়েছে ভোটের মাঠে। এই টানই আমাকে নামিয়েছে ঈগল প্রতীক নিয়ে। পরিবর্তনের জন্য। এই জনপদের। কি পরিবর্তন চান আপনারা? ইনশাআল্লাহ সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আপনাদের চেষ্টায় পরিবর্তন আসবেই। পরিবর্তন না হলে এই জনপদের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের সেøাগান হবে, ‘উন্নয়নের জন্য পরিবর্তন চাই।’ আমি নির্বাচিত হলে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবো, আলমডাঙ্গায় হাসপাতাল হবে, সদরে ৫০০ শয্যার হাসপাতালে রূপান্তরিত করবো। এখানে যুব সমাজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করবো। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক। তাই নির্বাচনের মাঠে হিন্দু-মুসলমান বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। এ সময় তিনি প্রত্যেক নির্বাচনি আসনের প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি করে মডেল মসজিদ, মাদরাসা, গোরস্তান, শ্মশান, মন্দির গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। পরিবারের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমার পরিবারের অবদান রয়েছে। আমার মাতামহ ও আপন দুই মামা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর বিহারীদের নারকীয় হামলায় ইতিহাসের কুখ্যাত ‘অপারেশন খরচাখাতায়।’ আমার মায়ের নামে করা স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, ‘তারা দেবী ফাউন্ডেশনের’ কথা আপনারা সবাই জানেন। ব্যক্তি উদ্যোগে আপনাদের পাশে আছি। সব সময় ছিলাম। দিলীপ কুমার আগরওয়ালা আরও বলেন, বৃহৎ পরিসরে উন্নয়নের জন্য। ডিও লেটার ছাড়া অনেক কিছুই সম্ভব নয়। একটা স্বাক্ষর অনেক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের জন্য। তাই চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য আমি এমপি হতে চাই। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার মানুষকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করার জন্য আমি এমপি হতে চাই। আমি আপনাদের কথা চিন্তা করে এখানে এসেছি। আমাকে সৃষ্টিকর্তা যতটুকু দিয়েছে, তা দিয়ে আমার পরবর্তী তিন প্রজন্ম সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে পারে। কিন্তু সবকিছু ছেড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এই সরকারই দিয়েছে। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গায় বণ্টন সমানভাবে হচ্ছে না। আমি নির্বাচিত হলে এসব অনিয়ম, বৈষম্য থাকবে না। আমি এমপি হলে প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি মডেল মসজিস, একটি মডেল মাদরাসা ও একটি মডেল পাবলিক কবরস্থান করবো। এছাড়াও প্রতিটা ইউনিয়নে একটা মডেল শ্মশান ও মডেল মন্দির করবো। কর্মমুখী শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কর্মসংস্থান নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি; বেকার মুক্ত হবে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা। কর্মসংস্থান পেলে হাত পেতে অনুদান নেয়ার সংস্কৃতি বন্ধ হবে। সৃষ্টিকর্তা যদি সুযোগ দেয়, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ফ্রি ওয়াইফাই জোন করে দেবো। তথ্য-প্রযুক্তি উন্নয়নের বিষয় তুলে ধরে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, অনলাইনে আউটসোর্সিং ট্রেনিং সেন্টার করে দেবো। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনা করা অবস্থাতেই অনলাইনে ইনকাম করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দেবো। সৃষ্টিকর্তা যদি সুযোগ দেয়, ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা আমি উপহার দেবো। তিনি আরও বলেন, এছাড়াও কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা, নারী জাগরণ, দারিদ্র বিমোচন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি, সন্ত্রাসমুক্ত জনপদ, অসাম্প্রদায়িক চুয়াডাঙ্গা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, দলিত ও অবহেলিত জনগোষ্ঠী, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে আমি কাজ করবো। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল মালেক, সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফি, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী রবিউল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আতিয়ার রহমান, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক ও সাবেক বিআরডিবি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মহিদ, আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অ্যাড. সালমুন আহমেদ ডন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু, ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, উপজেলা জাসদের সভাপতি মোল্লা গোলাম সরোয়ার, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস, পৌর জাসদের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ডালিম হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মন্টু, নুরুল ইসলাম, সাখাওয়ান হোসেন টাইগার, আব্দুল হালিম। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান কাওছার আহমেদ বাবলু ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান ফারুকের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ৭০’র অগ্নিসেনা মঈন উদ্দিন পারভেজ, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক রেজাউল হক তবা, ডাউকি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম দিপু মাস্টার, জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হোসাইন দিপক, কালিদাসপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা কামরুজ্জামান শামিম, গাংনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম, খাসকররা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার মাস্টার, জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী আফরোজা পারভীন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদুল ইসলাম খান স্বপন, যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর আশরাফুল হোসেন বাবু, হাসিবুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান রুবেল, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নয়ন সরকার, কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা তপন, ছাত্রলীগ নেতা টিটন, সজীব, এসকে শাকিল প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.