কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বাসিন্দা সুবেল হোসেনের বয়স মাত্র ২২ বছর। কিন্তু তার উচ্চতা ৮৭ ইঞ্চি, অর্থাৎ ৭ ফুট ৩ ইঞ্চি। অস্বাভাবিক উচ্চতা নিয়ে ভীষণ কষ্টে আছেন তিনি। সুবেলকে দেখতে বাড়িতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে। তার সঙ্গে ছবি তুলছে, ভিডিও করছে। এসব দেখে কান্না করছেন সুবেল। তিনি বেশ কয়েকটি রোগে ভুগছেন। কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়া তিনি দাঁড়াতে পারেন না। সুবেলকে নিয়ে কৃষক পরিবারে চিন্তার ভাঁজ। অর্থের অভাবে ছেলের ঠিকমতো চিকিৎসা করতে পারছেন না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন সুবেলের বাবা। সুবেলদের বাড়ি দৌলতপুরের রিফাইতপুর ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামে। বাবা কৃষক ইউনুচ আলী। মায়ের নাম পান্না খাতুন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সুবেল দ্বিতীয়। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট ভাই নবম শ্রেণিতে পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রে সুবেলের জন্ম তারিখ ১৯৯৪ সালের ২০ জুন লেখা থাকলেও তার বাবার দাবি, সুবেল ১৯৯৮ সালের বন্যার সময়ে জন্মগ্রহণ করেছিলো। জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল লেখা হয়েছে। ইউনুচ আলী বলেন, ১৩ বছরে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় একদিন সকালে ছেলেকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে গিয়েছিলেন তিনি। ছেলেকে একজোড়া জুতা কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিকেলে সেই জুতা আর পায়ে লাগেনি। পা এক দিনেই অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এরপর সুবেলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে টানা ১৩ দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, সুবেলের ব্রেন টিউমার হয়েছে। তাছাড়া হরমোনের কারণে তার শরীরে অস্বাভাবিক উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপর টাকার অভাবে অস্ত্রোপচার না করেই ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবন চলতে থাকে। গত ৯ বছরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে সুবেলের শরীর। শারীরিক সমস্যার কারণে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। সুবেলের বাবা জানান, তার নিজের ও স্ত্রীর উচ্চতা স্বাভাবিক। অন্য সন্তানদেরও কোনো সমস্যা নেই। তারা স্বাভাবিক উচ্চতার। কিন্তু সুবেল এতটাই লম্বা হয়ে গেছে যে লাঠি বা কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারে না। ঘরে ঢুকতে ও বের হতে সমস্যায় পড়তে হয়। দিন দিন তার পা ফুলে যাচ্ছে। এছাড়া শরীরের নানা স্থানে ফোলা রোগ দেখা দিয়েছে। সঙ্গে ব্রেন টিউমারও আছে তার।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জ্যৈষ্ঠ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবির বলেন, ব্রেন টিউমার থাকলে এমন হতে পারে। ছবি দেখে মনে হচ্ছে তার শরীরের হাড়গুলো অল্প বয়সে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। কিন্তু দুই পা কেন ফুলে গেছে, সেটা না দেখে বলা যাচ্ছে না। উন্নত চিকিৎসা করানো গেলে ভালো হতে পারে।