কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রাস্তা তৈরিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ১৩ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন ঠিাকাদার। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতাধীন (মথুরাপুর পশুহাট-হোসেনাবাদ স’মিল মোড়) মথুরাপুর জিসি থেকে জুনিয়াদহ জিসির ১ হাজার ৭৬২ মিটার (১.৭ কি.মি.) পাকা সড়ক সংস্কারের কাজ পান টিটু এন্টারপ্রাইজ নামক চুয়াডাঙ্গার এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ২৭৬ টাকা। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গত বছরের ২৯ ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে। আর কাজ শেষ করার কথা ছিলো চলতি বছরের ১২ মার্চের মধ্যে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। পরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকার নাসির নামে এক ঠিকাদারের কাছে কাজ বিক্রি করে দেন প্রতিষ্ঠানটি। গত ১৫ জুন ওই সড়কে কার্পেটিং করার সময় নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে কাজ বন্ধ করে দেয়।
সড়ক নির্মাণ কাজের প্রাইম কোটের ৪৮ ঘণ্টা পর কার্পেটিং করার বিধান থাকলেও আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই সড়কে প্রাইম কোট করা হয়। এরপর বৃষ্টিতে প্রাইম কোট ধুয়ে গেলেও পরদিন নতুন করে প্রাইম কোট না করেই নিম্নমানের পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করে ওই সড়কের কার্পেটিং করা হয়।
এছাড়া সিডিউল অনুযায়ী কার্পেটিংয়ে যে বিটুমিন ব্যবহারের কথা তার থেকে নি¤œমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ। এদিকে এলাকাবসী ঘটনার প্রতিবাদের পাশাপাশি বিষয়টি এলজিইডির কুষ্টিয়াস্থ নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানান। পরে নির্বাহী প্রকৌশলীর নিদের্শে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দ্দার ১৬ জুন সরেজমিনে রাস্তার কাজ দেখতে যান। এসময় তিনি কাজের মান নি¤œমানের হওয়ায় কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনার পর ঠিকাদারদের লোকজন নির্মাণ সরিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যান। পরে ১৮ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টিটু এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে ১৩ জন নিরীহ গ্রামবাসির নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৫-৬জনের দৌলতপুর থানায় চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে এলাকাবাসী মিথ্যা এ চাঁদাবাজির মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে হোসেনাবাদ সড়কে মানববন্ধন করেছে। এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দ্দার জানান, গ্রামবাসীর অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি সরেজমিনে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার করা উপকরণ সংগ্রহ করে তার মান যাচাইয়ের জন্য জেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ফলাফল পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে গ্রামবাসির বিরুদ্ধে ঠিকাদারের মামলা প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গ্রামবাসির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি এস এম আরিফুর রহমান মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে, তবে কাউকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।
মামলার বাদি ফিরোজ আহমেদের ফোন নম্বরে বার বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ