ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাঙ্গালীয়ানা আর রাজবধুর বাঙালি বধূর সাজ

 

নাজমুল হোসেন, লন্ডন থেকেঃ ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে হাটি হাটি পা পা করে কারী শিল্পের অস্কার খ্যাত ব্রিটিশ কারি এওয়ার্ড লন্ডনের বাটারসি ইভোলিউশনে জমজমাট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করলো তার এক যুগ পূর্তি অনুষ্ঠান। এবারের অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলো ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্য, টিভি ও ফিল্ম ব্যক্তিত্ব এবং ডাচেস অফ ইয়র্ক সারাহ ফারগুসনের উপস্থিতি। অনুষ্ঠানে শাড়ি পরিধান করায় ডাচেস অফ ইয়র্ক সারাহ ফারগুসন সকলের নজর কাড়েন। তাঁর হীরা খচিত পাদুকার সাথে একেবারে বাঙালি বধূর সাজে শাড়ী পরে  তিনি হেঁটেছেন অনুষ্ঠানের লাল গালিচায়।

 

আবার এ অনুষ্ঠানেই পূর্বে একেবারে বাঙালী তরুণীর সাজে অংশ নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে চমকে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। এবারের অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হতে না পারলেও পাঠিয়েছেন তাঁর ভিডিও শুভেচ্ছা বার্তা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ জীবনে কারী শিল্পের অপরিসীম গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, বাংলার কারী এখন ‘ফিস ও চিপস’ এর মত ব্রিটিশদের হৃদয় ছুয়ে গেছে, ওয়েস্ট মিনিস্টার থেকে শুরু করে সারা দেশেই এটা এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ মুহূর্তেও হাজার হাজার ব্রিটিশ হয়তো তাঁদের ঘরে বা রেস্টুরেন্টে বসে স্পাইসী কারি উপভোগ করছে।

 

১২ তম এ ব্রিটিশ কারী এওয়ার্ডের এ জমজমাট অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও ফিল্ম, আর্টস, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মেইন স্ট্রিম মিডিয়া,স্পোর্টস, তারকার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন বিবিসির খ্যাতনামা কমেডিয়ান আলিস্টায়ার মেকগাওন।তাঁর সাথে কো- উপস্থাপক ও উপস্থাপিকা হিসেবে ছিলেন নতুন প্রজন্মের জেফরি আলী আর জাস্টিন আলী। ব্রিটেনের কমিউনিটিতে কারী শিল্পের বিভিন্ন প্রভাব ও সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে ব্রিটিশ কারী এওয়ার্ডের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও স্পাইস বিজনেস এর সম্পাদক বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী এনাম আলী এমবিই বলেন, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে সত্যি আমি খুশি। এটি সফলভাবে করে আজ এটি ১২ বছরে পড়ে একটি পুরনাঙ্গতা পেয়েছে।  এ কৃতিত্ব আমার একার নয়, এটি একটি সম্মিলিত প্রয়াস। এ অনুষ্ঠানের সার্থকতা আসলে সমস্ত বাংলাদেশীদের স্বার্থকতা।কারন আমি তো ব্রিটিশ বাংলাদেশী হিসেবেই পরিচিত সাবার কাছে।

প্রতি বছর কারি শিল্পের বিকাশে ও উন্নতির জন্য, এ শিল্পের জড়িতদের প্রতিভাকে মূল্যায়ন করা হয়। এ বছর ২ লক্ষ ৬ হাজার ৩ হাজার ১ শত ৭১ জন বিভিন্ন ভাবে তাঁদের পছন্দের রেস্টুরেন্টের নাম পাঠায়, তা থেকে ২ হাজার ১ শত ৫৩ টি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। চূড়ান্ত পর্বে ১৩ টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করা হয়। ১২ টি ক্যাটাগরিতে ১২ টি রেস্টুরেন্টকে ও বিশেষ স্বীকৃতি স্বরূপ মরণোত্তর লর্ড গুলাম নুরকে এওয়ার্ডে সম্মানিত করা হয়।  unnamed

এ অনুষ্ঠানের বাড়তি আরেকটি আকর্ষণ ছিলো বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ত্রিচক্রযান রিকশা প্রদর্শন। একটি রিকশাকে সাজিয়ে অনুষ্ঠান ভেন্যুর সম্মুখে রাখা হয়, যা ছিল একেবারে দৃষ্টি নন্দিত। এছাড়াও অনুষ্ঠানে পরিবেশিত বাংলাদেশী খাবার ও বিভিন্ন দেশীয় কম্পোজকৃত নৃত্য বাড়তি মাত্রা যোগ করে সকলকে মুগ্ধ করে। জমজমাট এ অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে সেলিব্রেটি সেফ, রেস্টুরেন্ট মালিক ও স্টাফ ছাড়াও ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টার ক্রিস গ্রায়লিং, লর্ড কামলেশ পেটেল, লর্ড অ্যালেক্স চাক, ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল কাউনাইন, জেমস বন্ড সিনেমার হলিউড স্টার কলিন সোলমান, অ্যান মেইন এমপি,জেমস ক্লেভারলি এমপি, সেরন হডসসন এমপি, ফুটবল খেলোয়ার ডেভিড সিম্যান, নৃত্য শিল্পী ফ্রাঙ্কিই পোল্টনি, সঙ্গীত শিল্পী পাত্তি বাউলায়ে, অভিনয় শিল্পী কোলিন সালমন, ব্রডকাস্টার ও সাংবাদিক রাগেহ ওমর, বিশিষ্ট টিভি ব্যক্তিত্ব লিজি চান্ডি, টিম ভিঙ্কেন্ট, সায়েরা খান, পেট শার্প, সেলিব্রেটি সেফ হাস্টন ব্লুমেন্থাম এবং অনুষ্ঠানের স্পন্সর কুকড ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা সেলিম হুসেন উপস্থিত ছিলেন।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More