বাংলাদেশে ক্ষমতা পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেন ট্রাম্প

মাথাভাঙ্গা মনিটর: বাংলাদেশে ক্ষমতা পরিবর্তনে মার্কিন ডিপ স্টেটের কোনোরকম ভূমিকা থাকার অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রচার করেছে অনলাইন এনডিটিভি। তাতে দেখা যায়, ভারতীয় এক সাংবাদিক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ইস্যুতে প্রশ্ন করছেন। ওই সাংবাদিক বলেছেন, আপনি (ট্রাম্প) বাংলাদেশ ইস্যুতে কী বলবেন। আমরা দেখেছি এবং এটা স্পষ্ট যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় মার্কিন ডিপ স্টেট বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত ছিলো। এছাড়া মুহাম্মদ ইউনূসও (প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস) জুনিয়র সরোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সুতরাং বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী? জবাবে ট্রাম্প বলেন, এতে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটি এমন একটি বিষয় যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী (মোদি) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। শত শত বছর তারা কাজ করছে। সত্যি বলতে এ বিষয়ে পড়েছি। তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে বলার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর (মোদি) ওপর ছেড়ে দেবো। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ইস্যুতে কোনো জবাব দেননি। তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা শুরু করেন। প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন সফরে গেছেন মোদি। সেখানে দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। তবে পরে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে আমরা বিবৃতিতে বলি এটি এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে নিজের উদ্বেগ এবং দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী (মোদি)। একই সঙ্গে পরিস্থিতিকে ভারত কীভাবে দেখে তা তুলে ধরেন তিনি। বিক্রম মিশ্রি আরও বলেন, আমরা আশা করি বাংলাদেশ পরিস্থিতি সামনে এমন দিকে অগ্রসর হবে, যাতে আমরা একটি গঠনমূলক এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক রাখতে পারি। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ আছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে এসব বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ওদিকে একজন স্বাধীন বৈদেশিক নীতি বিশ্লেষক ও অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন ফরেন সার্ভিস অফিসার জন ড্যানিলোভিজ এই বৈঠকের পরে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকারের তালিকায় বাংলাদেশের সেভাবে স্থান নেই। ভারতের উদ্বেগের কথা যুক্তরাষ্ট্র শুনলেও, ইতিমধ্যে তারা তাদের নীতি ঠিক করে ফেলেছে।
উল্লেখ্য, মোদির এই সফরকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিক্রি ভারতে বৃদ্ধির চেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছে বিবিসি। তারা এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ট্রাম্প ২০২৫ সাল থেকে ভারতে সামরিক বিক্রি বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে আছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। আছে তেল ও গ্যাস রপ্তানি। এ বিষয়ে একটি বাণিজ্যিক চুক্তিতে একমত হয়েছে উভয় পক্ষ। একই সঙ্গে একটি নতুন প্রতিরক্ষা বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্কের বিষয়েও তারা একমত হয়েছেন। ট্রাম্প আরও নিশ্চিত করেছেন যে, ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত শিকাগোর ব্যবসায়ী তাহাব্বুর রানাকে ভারতের হাতে তুলে দেয়া অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক মাসেরও কম বয়সী ট্রাম্প সরকারের কাছ থেকে এটাকে অনেক বড় পাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের মাইকেল কুগেলম্যান।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More