স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুপুর থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি হালকা বৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে দিনতিনেক পরই শীতের অনুভূতি বাড়বে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। অগ্রহায়ণের প্রথম শুক্রবার বিকেলে আকাশ অন্ধকার করে দেশের কয়েকটি এলাকায় হঠাৎ বৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে পূবালী বাতাসের মিশ্রণে ফলে সৃষ্ট গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা থেকে এই বৃষ্টি হয়। আজ শনিবারও এ আবহাওয়া একই রকম থাকতে পারে। তবে রোববার থেকে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে আবহাওয়া অধিদফতর (বিএমডি) জানিয়েছে। এর পর তাপমাত্রা কমে শীতের দেখা মিলবে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকার আকাশে উড়ে আসা মেঘ এসেছে মূলত সুদূর আরব সাগর থেকে। সেখানে একটি গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এটি ইয়েমেন উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু ওই নিম্নচাপ থেকে একখ- মেঘমালা ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর সাথে আরব সাগরের শুষ্ক পূবালী বায়ুও রয়েছে। উল্টো দিক থেকে নেপাল ও হিমালয় হয়ে শীতল উত্তরের হাওয়া পঞ্চগড় দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। জলীয় বাষ্পে পূর্ণ পূবালী বাতাস ও উত্তরের শুষ্ক হিমেল বাতাসের সংঘাতে দেশের বায়ূম-লে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। উত্তরের বাতাস ও পুবালি বাতাসের সংঘাতের কারণেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝোড়ো বাতাস তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা। শনিবারও একই ধরনের বাতাস ও বৃষ্টি তৈরি হতে পারে। ওই বাতাসের গতি ঘণ্টায় বড় জোর ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার ও বৃষ্টি দু’তিন মিলিমিটারের বেশি হবে না বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।
আবহাওয়াবিদ মো. আরিফ হোসেন বলেন, কোনো লঘুচাপ নেই। তবে পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপের বর্ধিতাংশের প্রভাবে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। হেমন্তের মাঝামাঝি এ সময়ে শীত এখনও আসেনি, তবে অনুভূতি বাড়িয়ে দেবে এই বৃষ্টি। তিনি জানান, এ বৃষ্টি কেটে যাওয়ার পর অন্তত ৩-৪ দিন রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে। কোথাও কোথাও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। এতে শীতের অনুভূতি বেড়ে যাবে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, বর্ষা মরসুম প্রস্থানের পর বায়ু প্রবাহ দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিম থেকে ধীরে ধীরে ঘুরতে থাকে। এই প্রক্রিয়া নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত চলে। শীত মরসুম এলে বায়ু উত্তর-পশ্চিম থেকে প্রবাহিত হয়। কিন্তু মরসুম বায়ুর প্রবাহ ধারা পুরোপুরি ঠিক না হলে পুবালি বায়ুর সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমের বায়ুর সংমিশ্রণে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতি দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে হঠাৎ করে বাতাসের অবনমন ঘটে থাকে। বায়ু সামান্য কমে যায়। এছাড়া এই বাতাস ঊর্ধ্ব আকাশে গমনের ফলে যে মেঘমালা তৈরি হয় তাতে এ ধরনের বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতি তৈরি করে থাকে। বিএমডি জানিয়েছে, ডিসেম্বরে বাংলাদেশে শীত শুরু হলেও এর পরিস্থিতি তৈরি হয় নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। এ কারণে আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকবে। এ সময়ে তেতুলিয়া, দিনাজপুর, রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, সিলেট, ময়মনসিংহসহ অন্যান্য অঞ্চলের শীতের অনুভূতি বেড়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদনদীতে ভোর রাতের দিকে ঘন কুয়াশা দেখা যেতে পারে। স্থলভাগে ভোর রাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত কুয়াশা পড়তে পারে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
চুয়াডাঙ্গার নবীননগরে ফ্যানের সাথে গলার চেন পেঁচিয়ে মারা গেলেন বৃদ্ধা
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ