কেন্দ্রীয়ভাবে অভিন্ন একটি ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থায় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাড়া না দেয়ায় এবারও গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আগের মতোই পৃথক পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। অন্যদিকে কৃষি, প্রকৌশল ও সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি)-এই তিন গুচ্ছে ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির আবেদন গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে মেডিকেল কলেজগুলোতে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে এমবিবিএস প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। বস্তুত ভর্তির ভোগান্তি কমাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দীর্ঘদিন ধরে সমন্বিত বা কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থার দাবি করে আসছেন। এমনকি ইতঃপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও এ ব্যবস্থার পক্ষে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনাগ্রহের কারণেই বিষয়টি আটকে আছে। অভিযোগ আছে, এর পেছনের কারণ হলো বিদ্যমান ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বড় অঙ্কের অর্থ আয়। ভর্তি বাণিজ্য ও কোচিং-গাইড বাণিজ্যের জন্য অনেকেই সমন্বিত পদ্ধতির বিরোধিতা করেন। এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হলে এ ধরনের অনৈতিক ব্যবসা নিরুৎসাহিত হবে। সেটা অনেকেই চান না। তবে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু হলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব হবে। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি, সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি, সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি, সব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি-এভাবে আলাদাভাবে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হলেও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেকটা সহনীয় হবে। মেডিকেল কলেজগুলোতে গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। অনেক আগে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধীনে কুয়েট, চুয়েট ও রুয়েটে (সে সময় যথাক্রমে বিআইটি খুলনা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী নামে এগুলো পরিচিত ছিলো) একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও পরে তা বাতিল হয়ে যায়। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের স্বার্থে সমন্বিতই হোক বা গুচ্ছভিত্তিক, সব বিশ্ববিদ্যালয় মিলে একটি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছে। আশাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা এটি অনুধাবন করবেন। পরবর্তী সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও এ পথেই এগুতে হবে।