সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতি নেতৃবৃন্দের সাথে ছেলুন জোয়ার্দ্দার এমপির স্বাক্ষাৎ
স্টাফ রিপোর্টার: সাংবাদিকের ওপর নগ্ন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংসদ সদস্যের সাথে চুয়াডাঙ্গা সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের শীর্ষ ফোরাম নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষাতে মিলিত হলে তিনি এ আহ্বান জানিয়ে বলেন, চুয়াডাঙ্গায় কোন উশৃঙ্খলতার সুযোগ নেই। সে যেই হোক, সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়ে চরম অন্যায় করেছে। তার বিরুদ্ধে শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
গত পরশু রোববার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কম্পাউন্ডে কর্মরত অবস্থায় থাকা সাংবাদিক আহসান আলমের উপর স্বাস্থ্য বিভাগেরই এক কর্মী বাঁশের লাঠি দিয়ে নগ্ন হামলা চালায়। সাথে সাথে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। হামলাকারীর বিরুদ্ধে ওইদিনই আহসান আলম বাদী হয়ে তাকে হত্যা অপচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেন। স্বাস্থ্য বিভাগে নিযুক্ত ‘আস্থা’ কর্তৃক নিয়োগকৃত কর্মী ওয়ার্ডবয় রাসেলকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গার সভাপতিসহ নেতৃবৃন্দ। রাসেল চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়ার সাগরের ছেলে। রাসেলের সাথে হাসপাতালেই কর্মরত বৃষ্টি নামের এক মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে স্থানীয় পত্রিকা পশ্চিমাঞ্চলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আহসান আলম ওই পত্রিকার প্রতিবেদক। সাংবাদিকের ওপর হামলার ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও আসামিকে গ্রেফতার না করায় এবং একের পর এক সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে চুয়াডাঙ্গা সাংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদের আহ্বানে সোমবার বেলা ১১টায় এক সভা আহ্বান করা হয়। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদের আহ্বায়ক আজাদ মালিতার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংবাদপত্র পরিষদের সদস্য সচিব চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের সভাপতি নাজমুল হক স্বপন, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ ও সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ সদস্য জান্নাতুল আওলিয়া নিশি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়ে বিষদে আলোচনা করেন। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও অভিযুক্তকে ধরে আইনে সোপর্দ করতে না পরায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, জেলার সাংবাদিক ও সাংবাদিকদের শীর্ষ ফোরাম এ বিষয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। একই সাথে সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে পেশাগত দায়িত্বপালনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা চেয়ে স্মারকলিপি পেশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত থাকায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। বলা হয়, একজন সাংবাদিকের সংবাদ সংগ্রহ ও তা পরিবেশন পেশা। কারো অনৈতিক কর্মকা-ের বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে হামলার শিকার হওয়া দুঃখজনক। কোনভাবেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। পুলিশ প্রশাসন সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালনের পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে না পারলে বৃহত্তর কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে। সাংবাদিক আহসান আলমের উপর হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারলে হামলাকারী উশৃঙ্খলদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পাবে। অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে সংসদসদস্যের সম্মতি নিয়ে সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির সাথে মতবিনিময়ে মিলিত হন সাংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি নেতৃবৃন্দ। এ সময় জাতীয় সংসদ সদস্য ছেলুন জোয়ার্দ্দার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দর নিকট থেকে বিষয়ে বিস্তারিত শোনেন। বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলা নিন্দনীয় ঘটনা। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অবশ্যই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করবে। সাংবাদ পরিবেশন করবে। পেশাগত দায়িত্বপালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সমাজের কল্যাণ চায় না। চুয়াডাঙ্গায় কোন উশৃঙ্খলতার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সকলে আন্তরিকভাবে দেখবেন বলে বিশ^াস করি। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাড. আবু তালেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।