৩ মাস পর আদালতে হত্যা মামলা দায়ের : দুজন গ্রেফতার
চুয়াডাঙ্গার বড়সলুয়ায় স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের গড়িমশির অভিযোগ
বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার বড়সলুয়ায় প্রেম করে বিয়ের ২ মাসের মাথায় স্কুলছাত্রীর রহস্যজন মৃত্যু নিয়ে ধূর্ম জালের সৃষ্টি হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেতে হয়রানি ও নিয়মিত মামলা নিতে পুলিশের গড়িমশি করার অভিযোগ তুলেছেন স্কুলছাত্রীর পিতা মিজানুর রহমান। উপায়অন্ত না পেয়ে ঘটনার ৩ মাস পর বিজ্ঞ আমলী আদালতে মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মশিউর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৪জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি আবু হুরাইরা ওরফে মশিউর রহমানকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারলেও মামলার অপর আসামি ছেলের পিতা ও চাচাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত আব্দুল মমিন ও ইব্রাহীমকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। অপর দিকে একমাত্র মেয়েকে পাষ- স্বামীর পরিবারের লোকজন হত্যা করায় মেয়ের পিতা মাতার এখন কাটছে নির্ঘুমরাত।
মামলাসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বড়সলুয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী আফরিন মিম গত ২ জানুয়ারি স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করে একই গ্রামের আব্দুল মমিনের ছেলে আবু হুরাইরা ওরফে মশিউর রহমান (২৩)। এতে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে মশিউরের পিতা আব্দুল মমিন, মাতা বিলকিছ খাতুন ও মোবারক মোল্লার ছেলে চাচা ইব্রাহীম। মশিউর স্কুলছাত্রীকে আটকিয়ে বেআইনি মোতাবেক তাকে বিয়ে করে। মিম তার ভুল বুঝতে পেরে আবার স্কুলে পড়াশুনা করার উদ্যোগ নেয়। এতে বেকে বসে মশিউরের পরিবারের লোকজন। গত ৭ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিম স্কুলে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা দেবার চেষ্টা করলে আসামিরা তার কপালে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এতে মিমের শরিরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাতের ফলে রক্তক্ষরণে একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। সে সময় ময়নাতদন্ত শেষে লাসের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়। মিমের পিতা মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, মেয়ে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেতে আমাকে যেমন ভোগান্তি পোয়াতে হয়েছে; সেই সাথে দর্শনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। কোনো উপায় অন্ত না পেয়ে গত ১ জুন দর্শনা থানাধীন বিজ্ঞ আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর গতকাল মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারি অফিসার এসআই ফজলুর রহমান বড়সলুয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে মামলার ২নং আসামি আব্দুল মমিন ও ৪নং আসামী ইব্রাহীমকে নিজনিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। মামলার তদন্তকারি অফিসার এসআই ফজলুর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার অপেক্ষা করছিলাম। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মাথায় আঘাতের বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়েছে। মামলার ২ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। আর মেয়ের পিতা যে অভিযোগ তুলছে তা সঠিক না। আইন চলে নিয়মে আবেগে না। যেটা মিজানুর রহমান বোঝার চেষ্টায় করছে না। আর গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।