মেহেরপুর আদালতে ৬ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

গাংনীর ভিটাপাড়া গ্রামের রেজাউল হক হত্যা মামলার রায় ঘোষণা
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের রেজাউল হত্যার দায়ে রফিকুল ইসলাম, মাহামুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিনহুড, আব্দুল জব্বার, বিল্লাল, হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন এবং আব্দুল কাদের ওরফে সুমন নামের ৬ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে কারাদ-ের আদেশ দেয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত ৬ জনের মধ্যে হোসেন আলী পলাতক রয়েছেন। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় ৬ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার দুপুরের দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম গাংনী থানা পাড়ার আব্দুল মজিদের ছেলে, মাহামুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিনহুড কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসনাবাদ সেন্টারপাড়ার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে, আব্দুল জব্বার গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া মাইলমারি গ্রামের নয়মুউদ্দিনের ছেলে, বিল্লাল হিজলবাড়িয়া গ্রামের বারিকের ছেলে, হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন গাংনীর মালসাদহ গ্রামের অহিল উদ্দিনের ছেলে এবং আব্দুল কাদের ওরফে সুমন গাংনীর বাজারপাড়ার আজগর কসাইয়ের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১১ সালোর ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে গাংনী উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল হক তার নতুন ইটভাটার কাজ শুরু করার জন্য মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি ফিরতে দেরী হওয়ায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর তৎকালীন কমিশনার আলী আজগরের ইটভাটা থেকে তিনশত গজ দূরে একটি মেহগনি গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে খবর পেয়ে গাংনী থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং পরদিন তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুরে জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
এ ঘটনায় রেজাউল হকের স্ত্রী হাসিনা বানু বাদী হয়ে গাংনী থানায় ৩০২/৩৪ ধারা একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৪। ওই হত্যা মামলায় রফিকুল ইসলাম, মাহামুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিন হুড, আব্দুল জব্বার, বিল্লাল, হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন এবং আব্দুল কাদের ওরফে সুমন, আড়পাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আখতারুজ্জামান ওরফে বাবু, জালশুকা গ্রামের তাহার উদ্দিনের ছেলে জিয়ারুল, আড়পাড়া গ্রামের লাল চাঁদের ছেলে মজনু, মালসাদহ গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে আবুল কালাম, হাড়িয়াদহ গ্রামের নুর ফকিরের ছেলে খাজা এবং সানঘাট গ্রামের ওয়াদুদ আলীর ছেলে আবুল কালামকে আসামি করা হয়।
১২ আসামির মধ্যে ৪ জন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-৬ গাংনীর এসআই বাবুল মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামি রফিকুল ইসলাম, মাহামুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিন হুড, আব্দুল জব্বার, বিল্লাল, হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন, এবং আব্দুল কাদের ওরফে সুমনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ৬ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ৬ মাসের করে কারাদ-ের আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত হোসেন আলী পলাতক পলাতক থাকায় আটকের দিন থেকে তার সাজা শুরু হবে। একই মামলার অপর আসামি আখতারুজ্জামান ওরফে বাবু, জিয়ারুল ইসলাম, মজনু, আবুল কালাম, খাজা ও আবুল কালাম ওরফে শান্তর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজি শহীদ এবং আসামি পক্ষে অ্যাড. মিয়াজান আলী, অ্যাড. ইব্রাহিম শাহীন, অ্যাড. শফিকুল আলম ও অ্যাড. রমজান আলী কৌশলী ছিলেন।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More