জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব দিতে গিয়ে উন্নয়নের বর্ণনাসহ দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন হাজি আলী আজগার টগর এমপি
স্টাফ রিপোর্টার: জীবননগরের দৌলতগঞ্জ-মাজদিয়া কিম্বা দর্শনার জয়নগর-গেদে যেখানেই স্থলবন্দর হোক তার সুবিধা ভোগ করবে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহবাসী। দু’দেশের মধ্যে মালামাল আদান প্রদানে ঢাকার সাথে অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় দূরুত্ব কমবে ৪০ কিলোমিটার। এ যুক্তিসহ দুটির যেখানেই হোক দ্রুত স্থলবন্ধর চালু করার গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রীর আশুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন চুয়াডাঙ্গা-2 আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে তিনি দেশ ও তার নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের বিষদ বর্ণনাও তুলে ধরে বলেন, মহামারী করোনার কারণে বিশ্বে যখন পিছিয়ে গেছে, তখনও বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের দেশে জিডিপি ৫এর ওপরে উঠেছে। বিশ্বদরবারে আমাদের দেশ উন্নয়নের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দর্শনাকে থানায় উন্নীত ও জীবননগরের একটি কলেজকে সরকারিকরণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজি আলী আজগার টগর এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার অনেক গ্রামেই যেতে হয়েছে রাস্তার বদলে জমির আইল দিয়ে। এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। প্রায় প্রতিটি গ্রামেই পাকারাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। ৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ পাঁচিল নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হওয়ার পথে। মাদরাসায় টিনের ছাউনি ছিলো না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তার নির্দেশনায় মাদরাসাগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। ২০টি ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেকটিকেই প্রায় পৌরসভার মতো উন্নয়ন করা হয়েছে। ১৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মুজিবনগর-দর্শনা সড়ক নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। দর্শনা থানায় উন্নীত করার সুফল পাচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। তিনি দর্শনাকে উপজেলায় উন্নীত করার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব বক্তব্যের শুরুতে হাজি আলী আজগার টগর এমপি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। ১৫ আগস্টের কালোরাতে বঙ্গবন্ধুসহ যারা শহীদ হয়েছেন তাদের এবং জাতীয় ৪ নেতার আত্মার প্রতি সম্মান জানিয়ে ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলায় যারা শাহাদত বরণ করেন তাদেরকে স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার। তিনি যখন দেশ গড়ার কাজে নিবেদিত তখনই মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি তাকে হত্যা করে। এরপর দীর্ঘদিন অনেক কিছুই দেখেছি। উন্নয়নের নামে কিছুই হয়নি। এরপর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতার পরবর্তী ইতিহাসে স্বর্ণযুগ গড়ে তোলেন। এরপর আবার জামাত-বিএনপি সরকার দেখেছি। তখন লুটপাট ছাড়া আর কিছুই হয়নি। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দিনবদলের সনদ নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসার পর দেশের উন্নয়ন দেখলে তা অনেকটা রূপকথার মতোই হয়ে দাঁড়িয়েছে। রূপগঞ্জ সৌরচুল্লি বাস্তবায়নের মহাযজ্ঞ চলছে। হাজার হাজার মানুষ সেখানে কাজ করছে। অচিরেই তা বাস্তবায়ন হবে। পদ্মসেতু ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ঘুরছে আকাশে। এসব সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে বলেই।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে হাজি আলী আজগার টগর এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যদি ঘাতক খুনিচক্র হত্যা না করতো, বঙ্গবন্ধু যদি আর ১৫/২০ বছর বেঁচে থাকতেন; তা হলে আমাদের দেশ অনেক আগেই মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর হয়ে যেতো। সেটা হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার দেশপ্রেম দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এলাকার প্রায় ৭৫টি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো তথা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সুন্দর সুদৃশ্য পাঁচিলসহ বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ২০টি মাদরাসার মধ্যে ১৫টি মাদরসার ৪তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। জীবননগর মহিলা কলেজকে সরকারিকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। স্পিকারের মাধ্যমে ধন্যবাদ জানাই। দুটি হাসপাতাল ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। নতুন অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয়েছে। ফায়ারব্রিগেড দরকার। ফায়ারব্রিগেট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভা। ২০টি ইউনিয়ন প্রায় পৌরসভায় উন্নীত করা হয়েছে। যা অবিশ^াস্য। একসাথে এলাকার ৪টি ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনা রয়েছে বলেই এসব উন্নয়ন হচ্ছে। করোনা না হলে আরও উন্নয়ন করা সম্ভব হতো।
স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে দর্শনাকে থানায় উন্নীত করায় ধন্যবাদ জানিয়ে দর্শনাকে পরবর্তীতে উপজেলায় উন্নীত করার অনুরোধ জানান। ১৯৬৫ সালে জীবননগরে চেকপোস্টটি বন্ধ হয়ে যায়। এটা পুনরায় চালু করা হলে বেনাপোল বন্দরের চেয়ে ঢাকার সাথে সড়ক দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমবে। ক’দিন আগে স্থলবন্দর চেয়ারম্যান দর্শনা ও জীবননগরে চেকপোস্ট পরিদর্শন করেছেন। দুটি স্থানই আমার এলাকায়। যে জায়গাতেই স্থলবন্ধর করা যায় সেখানেই স্থলবন্ধর করা হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। সুবিধা পাবে মালামাল আদান প্রদানকারীরা।
পরিশেষে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে প্রশংসা করে আগামীতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ