শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত : শীতে কাঁপছে দেশ

চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে কম্বল বিতরণ অব্যাহত
স্টাফ রিপোর্টার: মাঘ মাসের মাঝামাঝিতে এসে শীতের যে কাঁপন টের পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে, তা আরও কয়েকদিন চলবে বলেই আভাস মিলেছে। কোথাও হালকা, কোথাও মাঝারি ধরনের এই শৈত্যপ্রবাহে নাকাল সারাদেশ। খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৩০টির বেশি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। থার্মোমিটারের পারদ ফের নেমে এসেছে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। সঙ্গে রয়েছে কনকনে শুকনো বাতাস। ফলে বাইরে বের হলে গরম কাপড়েও কমছে না শীত অনুভূতি। রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে ২৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো তেঁতুলিয়ায় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৩ এবং সর্বোচ্চ ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। চলতি মৌসুমে এবার সবচেয়ে কম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ২৮ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছর এ নিয়ে তৃতীয়বার আর এই শীতে চলছে চতুর্থ শৈত্য প্রবাহ। এই শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে রোববার জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে দুস্থ শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থা করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে। এ অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও নদী-অববাহিকায় মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়বে। এদিকে টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, ফেনী, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল এবং ভোলা জেলা ও সীতাকু- উপজেলাসহ রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। ঢাকায় পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ৬ থেকে -১২ কি.মি.। আগামীকাল মঙ্গলবার নাগাদ রাতের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। বর্ধিত ৫ (পাঁচ) দিনের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল সৈয়দ কামরুজ্জামান ও রোটারি ক্লাব ঢাকার সহায়তায় কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৬৪০টি কম্বল বিতরণ করা হয়। গতকাল রোববার কম্বল বিতরণ কর্মসূচির তৃতীয় দিনে আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কম্বল বিতরণ করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল সৈয়দ কামরুজ্জামান বিজিবিএম। এর আগে গত শুক্রবার বাদ জুম্মা জেলা শহরের জান্নাতুল মওলা মসজিদের সামনে অসহায় দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল সৈয়দ কামরুজ্জামান বিজিবিএম। পরে ওইদিন বিকেলে ‘আমরা মানুষের জন্য’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় চক্ষু হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কম্বল বিতরণ করা হয়। পরদিন শনিবার সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণ, আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদি ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণ, আলমডাঙ্গা পৌরসভা ও বাড়াদি ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে অসহায় দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করা হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলার কম্বল বিতরণের সার্বিক দায়িত্বে থাকা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহিদুল কাউনাইন টিলুর সভাপতিত্বে উপজেলার কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল সৈয়দ কামরুজ্জামান বিজিবিএম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মাঝারি শৈতপ্রবাহের কারণে প্রচ- শীতে বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার অসহায় দুস্থ মানুষগুলো কষ্টে রয়েছে। তাদের কষ্ট লাঘবেই আমাদের একটি সামাজিক উদ্যোগ। সমাজের সকল বিত্তবান শ্রেণির মানুষ যদি অসহায় দুস্থ মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ায় তাহলে সমাজটা আরও সুন্দর হবে। আমরা ভবিষ্যতেও চুয়াডাঙ্গার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সদর থানা বিএনপি রেজাউল করিম মুকুট, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক মজিবুল হক মজু, চুয়াডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাড. শামীম রেজা ডালিম, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সা. সম্পাদক আবু জাফর মন্টু, দামুড়হুদা উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, জেলা জাসাস সভাপতি শহিদুল হক বিশ্বাস, কৃষক দল সভাপতি বোরহান উদ্দিন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ইসরাক হোসেন, আলুকদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, হারদি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সম্পাদক মইনুল হোসেন, জামজামি ইউনিয়ন বিএনপি নেতা পান্না চৌধুরী, ওহাব মাস্টার, ডা. আলাউদ্দিন, বিল্ল¬াল মাস্টার প্রমুখ।
উপস্থিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, দানশীল অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্ণেল সৈয়দ কামরুজ্জামান বরাবরই প্রচার বিমুখ। তিনি সাধারণত গোপনেই দান করতে পছন্দ করেন। সারাবছরই তিনি চুয়াডাঙ্গার অসহায় মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করেন। প্রতিবছর রোজার মাসব্যাপী তিনি গরীব দুস্থদের খাবার সহায়তা দেন। এছাড়াও করোনার শুরু থেকেই তিনি যেভাবে কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। আপনারা সকলে তার জন্য দোয়া করবেন, তিনি যেন তার এই সমাজসেবামূলক কাজগুলো ভবিষ্যতেও সুন্দরভাবে চালিয়ে যেতে পারেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মো. জাকির হোসেন, ফারুক হাসান চান্দু ও আমিনুল ইসলাম লুলু, হারদির মালেক, জামজামির শাহজাহান ডাক্তার, বাড়াদি ইউপি বিএনপির আব্দুল মান্নান, সুন্নাত প্রমুখ।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি’র পক্ষ থেকে মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া মিশন এতিমখানায় শীতার্ত শিশুদের মধ্যে কম্বল প্রদান করা হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ভবরপাড়া মিশন এতিমখানায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপির পক্ষে কম্বল প্রদান করেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রফিকুল ইসলাম তোতা। কম্বল গ্রহণ করেন প্রধান শিক্ষক মালতী মালো। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মি. আদম বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা হাসানুজ্জামান লাল্টু, বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুহিন, ইউপি সদস্য সিবাস্তিয়ান মল্লিক ঝড়ু, বাগোয়ান ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি সোহানুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More