স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলমান লকডাউন পবিত্র ঈদকে ঘিরে বেশ শিথিল করা হয়েছে। পর্য়ায়ক্রমে খুলে দেয়া হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের পোশাক কারখানা। ঈদকে সামনে রেখে শপিংমলও খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। আর এতে বেড়েছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা। শপিংমলগুলো চালু করার ফলে যেনো করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি না পায় সেজন্য ১৪ নির্দেশনা বেঁধে দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। বুধবার ব্যবসায়ী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তÍ জানানো হয়।
পুলিশ সুপারের দেয়া নির্দেশনাগুলো হলো:
১. সরকার ঘোষিত নির্ধারিত সময় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শপিং মল ও দোকান খোলা রাখা যাবে। তবে ফুটপাতে বা প্রকাশ্য স্থানে হকার, ফেরিওয়ালা বা অস্থায়ী দোকানপাট বসতে দেয়া যাবে না।
২. করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ক্রেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত শপিং মলে ঘোষিত সময়ের মাঝে কেনাকাটা করতে পারবেন। এক এলাকার ক্রেতা অন্য এলাকায় অবস্থিত শপিং মলে কেনাকাটা বা গমনাগমন করতে পারবেন না।
৩. বসবাসের এলাকা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রত্যেক ক্রেতা তার নিজ নিজ পরিচয়পত্র (যেমন ব্যক্তিগত আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানির বিলের মূল কপি ইত্যাদি) বহন করবেন এবং তা শপিং মলের প্রবেশমুখে প্রদর্শন করবেন।
৪. প্রত্যেক শপিং মলের প্রবেশমুখে স্বয়ংক্রিয় জীবাণুনাশক টানেল বা চেম্বার স্থাপন করতে হবে এবং তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়া, প্রত্যেক দোকানে পৃথকভাবে তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৫. প্রতিটি শপিং মলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। মাস্ক পরিধান ব্যতীত কোনও ক্রেতা দোকানে প্রবেশ করতে পারবেন না। সব বিক্রেতা ও দোকান কর্মচারীকে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করতে হবে।
৬. প্রতিটি শপিং মল/বিপণি বিতানের সামনে সতর্কবাণী ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে, মৃত্যু ঝুঁকি আছে’ সংবলিত ব্যানার টানাতে হবে।
৭. প্রতিটি শপিং মলে প্রবেশ, বাহির ও কেনাকাটার সময় ক্রেতা-বিক্রেতাকে কমপক্ষে এক মিটার (প্রায় ৪০ ইঞ্চি) দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দোকানে যত জন ক্রেতা অবস্থান করতে পারেন, তার বেশি ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।
৮. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রত্যেক দোকানের সামনে দূরত্ব মেপে মার্কিং করতে হবে।
৯. শপিং মলগুলোতে বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থদের (হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য) গমনাগমনে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
১০. কেনাকাটা শেষে মার্কেটে অযথা জটলা বা ভিড় সৃষ্টি করা যাবে না। যাদের কেনাকাটা শেষ হয়ে যাবে মার্কেট কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে তাদের বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
১১. শপিং মলগুলোতে প্রবেশ ও বের হওয়ার আলাদা পথ নির্ধারণ করে দিতে হবে।
১২. যারা মাস্ক না পড়ে আসবেন তারা মার্কেট থেকে কিনে নেবেন। অন্যথায় যাতে মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৩. প্রত্যেক শপিং মলের পার্কিং লটে গাড়ি জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া, ড্রাইভাররা যাতে একত্রিত হয়ে আড্ডা না দেয় এবং নিজ নিজ গাড়িতে অবস্থান করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. শপিং মলগুলোতে যাতায়াতের জন্য সীমিত পরিসরে সাধারণ রিকশা ও সিএনজি চালু থাকবে। তবে সিএনজিতে দুই জনের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে নিরুৎসাহিত করা হলো। প্রত্যেক যাত্রী এবং চালক মাস্ক পরিধান করবেন।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, করোনা ভাইরাসকে রুখকে ও পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে যাতে কেউ করোনায় আক্রান্ত না হয় সেজন্য এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনো ব্যবসায়ী এসব নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। করোনার এ সময়ে কাজ ছাড়া কাউকে ঘরে হতে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। কোনভাবেই সরকার কিংবা পুলিশের একার পক্ষে করোনা মোকাবেলা সম্ভব নয় বলেও তিনি জানান।
পূর্ববর্তী পোস্ট
দামুড়হুদায় ইউএনও’র নিকট দর্শনা অ্যাসেম্বলি নেতৃবৃন্দের দাবীনামা পেশ
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ