স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার জাফরপুর গ্রামে মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে বাবা এনামুল হক জনিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এর আগে গত সোমবার দিনগত রাত ২টার দিকে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ থানার কাশিপুর গ্রাম থেকে জনিকে গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে, ভুক্তভোগী ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জানা গেছে, জাফরপুর গ্রামের পাওয়ার হাউস পাড়ার ফকির মোহাম্মদের ছেলে এনামুল হক জনি (৪০) একটি ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী। এর আগেও তার একাধিক বিয়ে হয়েছিলো। জনির আগের স্ত্রীর একটি কন্য সন্তান রয়েছে। ১৪ বছর বয়সী ওই কন্যাসন্তান মাদরাসায় পড়াশুনা করে। বিভিন্ন সময় সেই মেয়েকে কু-নজর ও কু-প্রস্তাব দিত অভিযুক্ত জনি। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১ ডিসেম্বর স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে নিজের কন্যা সন্তানকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় বাবা এনামুল হক জনি। তখন কৌশলে নিজেকে রক্ষা করে ওই শিশুটি। লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি পরিবারের কাউকে না জানিয়ে তার এক বান্ধবীকে বলে দেয় সে। এরপর গত ১৫ মার্চ কর্মস্থল থেকে বাবার বাড়িতে ফেরার কথা শুনে ঘরে থাকা তিনটি প্যারাসিটামল ওষুধ সেবন করেন ভুক্তভোগী মেয়ে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাও দেয়া হয় তাকে। তখন বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে গত সোমবার অভিযুক্ত জনির বাড়ি ঘেরাও করেন স্থানীয় জনতা। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক তার বাড়ির সামনে অবস্থান নেয় উত্তেজিত গ্রামবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সদর থানার ওসি খালেদুর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা। পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। এসময় অভিযুক্ত জনি বাড়িতে না থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে ওই বাড়ি থেকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয় ভুক্তভোগী কিশোরী কন্যাকে। এরপর ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন ওই কিশোরীর মামা। মামলার পর অভিযুক্ত বাবা জনিকে গ্রেফতারে অভিযানে নামে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা ও ডিবি পুলিশ। অভিযানে গত সোমবার রাতেই জনিকে তার মামার বাড়ি ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের কাশিপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গতকাল সকালে তাকে আদালতে তোলা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান জানান, ওই কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবাকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তড়িৎ পুলিশি অভিযানে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সেইসাথে ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে। এছাড়া আসামির রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.