চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও একজনের মৃত্যু : নতুন শনাক্ত ২৭
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। আলমডাঙ্গা পারদুর্গাপুরের আমজাদ নামের আনুমানিক ৬৭ বছর বয়সী শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান। এছাড়া উথলী ইউপি চেয়ারম্যান কয়েকদিনের জ্বরের পর শুক্রবার শ্বাসকষ্ট বাড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসক সেবিকাদের প্রত্যাশিতভাবে পাশে না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেন তিনি। পরে অবশ্য তাকে হাসপাতালেই রাখা হয়। অপরদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে ৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। এর মধ্যে ২৭ জনের করোনা তথা কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছে। এ দিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮শ ১৬ জনে। এদিন আরও ১০ জন সুস্থতা পেয়েছেন। এ দিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৩শ ৯৫ জন।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ৬ জন। শুক্রবার এ তালিকায় আরও একজনের নাম যুক্ত হলো। আলমডাঙ্গা পারদুর্গাপুরের আমজাদ হোসেন কয়েকদিন ধরে সর্দি কাশি জ্বরসহ শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তাকে শুক্রবার দুপুরে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হলুদ জোনে রেখে চিকিৎসা দেয়ার এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান তিনি। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশ দাফনের অনুমোদন দিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন। এদিকে নমুনায় যে ২৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৮জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৯জন, দামুড়হুদা উপজেলার ৫ জন ও জীবননগর উপজেলার ৫ জন। শুক্রবার নতুন করে কোনো নমুনা নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৮ জনের মধ্যে গাইদঘাটের ১জন, জ্বিনতলা মল্লিকপাড়ার ১জন, বেলগাছীর ১জন, হকপাড়ার ১জন, মাদরাসা পাড়ার ১জন, দৌলাতদিয়াড়ের ১জন, মুসলিমপাড়ার ১জন ও গুলশানপাড়ার ১জন। দামুড়হুদা উপজেলার দশমির ১জন, দর্শনা পুরাতন বাজারপাড়ার ১জন, দর্শনার ১জন, রামনগরের ১জন, সদাবরির ১জন। আলমডাঙ্গা উপজেলার ৫ জনের মধ্যে হাটবোয়ালিয়ার ১জন, পুরাতন বাজারের ১জন, মহল্লার নাম উল্লেখ না করে শুধু ঠিকানা লেখা আছে আলমডাঙ্গার ৩জন, হাউসপুরের ১জন, কুমারির ২জন ও মুন্সিগঞ্জের একজন। জীবননগর উপজেলার ৫ জন হলেন জীবননগর হাসপাতালপাড়ার ১জন, শাপলাকলীপাড়ার ১জন, মহল্লা উল্লেখ না করে ঠিকানা দেয়া জীবননগরের একজন ও পুরাতন তেতুলিয়ার ১জন।
আক্রান্তদের মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলশেন ছিলেন ২৯ জন। বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩শ ৭৭ জন। শুক্রবার যে ২৭ জন শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে মহিলা ১২ জন পুরুষ ১৫ জন। এদের বয়স ৬ থেকে ৬৭ বছর পর্যন্ত রয়েছেন। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সংশ্লিষ্টসূত্র জানিয়েছেন, তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। শুক্রবার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তিনি চিকিৎসা নেয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে ভর্তির দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন। তিনি এ ক্ষোভ নিয়েই বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেন। এ সময় তাকে সিভিল সার্জন অনুরোধ করে প্রত্যাশিত চিকিৎসা সেবা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাসপাতালেই রাখেন। এদিকে করোনা উপসর্গে আক্রান্তের সংখ্যা চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলেও আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন দিন নমুনা দিয়ে করোনা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। অবাক হলেও সত্য যে, করোনা উপসর্গে ভুগে করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়েও অনেকেই ঘুরছেন জনসাধারণের মাঝে। বিশেষ করে উঠতি বয়সীদের মধ্যে এ প্রবণতা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। ফলে করোনা সংক্রমণ বিস্তার হচ্ছে।