ভারত থেকে ফেরা ২৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে দেশের ও ভারতের ১৩ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে র্যাপিডএন্টিজেন টেস্টে জেলার পদস্থ দুজন কর্মকর্তাসহ ৩ জনের পজিটিভ হয়েছে। অপরদিকে দর্শনা গেটে চেকপোস্ট হয়ে দেশে প্রবেশের সময় ২৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে দেশের ৫ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছে। ভারতীয় ৮ জনের পজিটিভ হয়। দেশের যে ৫ জনের পজিটিভ হয়েছে তাদের দেশে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়। ভারতীয় ৮ জনকে ভারতে ভেরত দেয়া হয়েছে।
সারা দেশেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়েছে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নিদের্শনাও জারি করেছে সরকার। এরপরও সর্বক্ষেত্রে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে না। এদিকে চুয়াডাঙ্গাতেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ল্যাবে কয়েকজনের নমুনা পরীক্ষা করে তিন জনের পজিটিভ হয়েছে। সূত্র বলেছে, চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের নমুনা পরীক্ষা করে র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়। অপরদিকে ঢাকায় ডিসি সম্মেলনে যোগদানের জন্য শর্ত মোতাবেক করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানসহ কয়েকজন। সূত্র বলেছে, জেলা প্রশাসকেরও কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছে। দুজনেরই নমুনা পুনঃপরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআরসি ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগসূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে র্যাপিড এন্টিজেন পরিক্ষা করা হলে জেলার শীর্ষ এই কর্মকর্তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পরে নিশ্চিত করলে হাসপাতালের আর-টি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পাঠানো হয়। সেখানেও তাদের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকেই নিজ নিজ বাসভবনে হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে যান তারা। এর আগে মঙ্গলবার ১১ জানুয়ারি সিভিল সার্জন হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় যোগদান করেন। এর দুদিন পর বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার সাজিয়া আফরীন নিশ্চিত করে বলেন, স্যার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেনেছি। রিপোর্ট পাওয়ার পরই তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। স্যার সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি চুয়াডাঙ্গায় আসার পর থেকেই রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, রোববার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পেয়েছি। আল্লাহর রহমতে এখন সুস্থ আছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। এর আগে রোববার সকালে জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান দর্শনা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ডিসি সম্মেলনে যোগ দেয়ার আগে জেলা প্রশাসকদের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এজন্য রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসক মহোদয় সদর হাসপাতালে নমুনা দিয়েছেন। সেখানে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে পুনরায় যাচাইয়ের জন্য পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। ডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল বিকেলেই ঢাকায় গেছেন জেলা প্রশাসক।
এদিকে গতকাল দর্শনা গেদে চেকপোস্টে ভারত ফেরত ২৮৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। র্যাপিডএন্টিজেন পরীক্ষায় দেশের ৫ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। ভারতীয় ৮ জনেরও করোনা পজিটিভ হলে তাদের ভারতে ফেরত দেয়া হয়। দেশের যে ৫ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে তাদের চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন কর্মকর্তারা। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ১৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী আইসোলেশনে ছিলেন। এদের মধ্যে সবাই ভারত ফেরত। ভর্তি রোগীর মধ্যে ১২ জন ভারতীয় এবং একজন চুয়াডাঙ্গার।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ১১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গায় যোগদান করেন সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান। বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি যোগদান করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।