মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুরে কোরবানির পশু কেনাবেচায় অস্থিরতা বিরাজ করছে। বড় আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ মাংস ১৫ হাজার টাকা হিসেবে। যা গেলো বছরের চেয়ে মণ প্রতি ৫ হাজার টাকা কম। ছোট গরুর চাহিদা ও দর স্বাভাবিক হলেও বড় গরুর অবস্থা বিপরিত। ফলে জেলার উদীয়মান অর্থনৈতিক এ খাত মহা সংকটের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্ঠদের।
ব্যাপারিরা জানান, গরু কেনার সময় আনুমানিক ওজন ও মাংসের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। গেলো কয়েক বছর ধরে প্রতি মণ মাংস ২০ হাজার টাকা ধরে কেনাবেচা চলে আসছে। এবার সেই দর কমে ১৫ থেকে ১৭ হাজারে ঠেকেছে। ছোট আকারের গরুর দর বড় আকারের গরুর চেয়ে কিছুটা বেশি। ছোট আকারের গরু বিক্রি করলে লোকসান হয়। তাই দেড় থেকে তিন লাখ টাকা দর হওয়া পর্যন্ত গরু পালন করেন খামারিরা।
পশুহাট সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জেলার সবচেয়ে বড় পশু হাট বামন্দী-নিশিপুর পশুহাট। এ হাটে আগের মতো নেই বাইরের জেলার ব্যাপারিদের আনাগোনা। আর গুটি কয়েক ব্যাপারি যারা আসছেন তারা ছোট গরু নিয়ে বেশি ব্যস্ত। বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় দর পতন শুরু হয়েছে।
কয়েকজন খামার মালিক জানান, ৬০-৯০ হাজার টাকা দরের গরুর চাহিদা বেশি। স্থানীয় যারা কোরবানি করবেন তারাই মূলত এর ক্রেতা। অপরদিকে ২০-৩০ মণ ওজনের গরুগুলো প্রতি বছরই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। এবার সেখানে চাহিদা কম থাকায় বড় আকারের গরু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন খামারিরা।
খামারি সুলতান মাহমুদ শান্ত বলেন, সারা বছর গরু পালন করার পর কোরবানির আগে বিক্রি উপযোগী হয়। এখন যে দর চলছে তাতে খরচ উঠবে না। অপরদিকে গরুগুলো বিক্রি না করে খামারে রেখে দিলে লোকসানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তাই অনেকে কম দামেই গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে খামারিরা চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।
বাওট গ্রামের গরু ব্যাপারি মিনাল হোসেন বলেন, লাখের মধ্যে বিক্রি হবে এমন ৮টি গরু নিয়ে বামন্দী-নিশিপুর হাটে গিয়েছিলাম গেলো সোমবার। এক আধ হাজার টাকা লাভে গরুগুলো বিক্রি করতে পেরে হাফ ছেড়েছি। কয়েক হাট গরু নিয়ে ঘুরে বিক্রি হচ্ছিলো না।
একই হাটের ব্যাপারি ধানখোলা গ্রামের বাবলু হোসেন বলেন, গ্রামে গরু পালনকারীদের বাড়ি থেকে ১৫ হাজার টাকা মণ দরে কিনেছি। হাটে বিক্রি করতে গিয়েও একই দর। আর আগের বছর প্রতি মণ মাংস ২০ হাজার টাকা হিসেবে কেনাবেচা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় হাট-বাজার ছাড়াও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের অফিসিয়াল অনলাইন পশু কেনাবেচার হাটের মাধ্যমে কেনাবেচা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ কার্যালয় গরু কেনাবেচার ক্ষেত্রে কাজ করছে বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এক লাখের উপরে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মোষ কোরবানি উপযুক্ত। এর মধ্যে জেলায় চাহিদা ৭০ হাজারের মতো। বাকি পশুগুলো বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ