স্টাফ রির্পোটার: আলমডাঙ্গায় দিনদুপুরে এক শিশু অপহরণের শিকার হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের কলেজপাড়া থেকে ওই শিশুকে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। অপহৃত শিশু কাজী আবদুল আজিজ ফারহান (৪) আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ার দন্ত চিকিৎসক কাজী সজিবের একমাত্র ছেলে। অপহরণের কয়েক ঘণ্টার মাথায় শিশু কাজী ফারহানের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় ওই শিশুর পরিবারে নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। শিশু কাজী ফারহানকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে থানা পুলিশ।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর ঘুমোয় শিশু কাজী ফারহান। বিকেলে ঘুম থেকে উঠে বেলা সাড়ে ৪টার দিকে সে বাড়ির বাইরে খেলছিলো। এ সময় অজ্ঞাত দুজন জুসের প্যাকেট হাতে ধরিয়ে দিয়ে তাকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শিশু ফারহানকে মোটরসাইকেলে নিয়ে দ্রুত আনন্দধামের দিকে চলে যায় দুজন। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানসহ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজখবর রাখেন। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে ভেঙে পড়েন তারা।
এলাকাসূত্রে জানা গেছে, অপহরণের প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর অপহৃত শিশু কাজী ফারহানের পিতা দন্ত চিকিৎসক কাজী সজিবের মোবাইলফোনে কল দেয় অজ্ঞাত ব্যক্তি। এ সময় ফারহানের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে ভয়াবহ পরিণতির কথা জানায় অপহরণকারীরা। বিষয়টি পুলিশকে জানালে শিশুটিকে হত্যা করা হবে বলেও সতর্ক করে দেয় অপহরকরা। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুনরায় রিং দিয়ে আবারও মুক্তিপণের টাকার জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বার মুক্তিপণ দাবির সময় অনেক অনুরোধে ১০ লাখ টাকার স্থলে মুক্তিপণ ৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। একই সাথে পুলিশকে জানালে শিশুটিকে হত্যা করা হবে বলে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অপহৃত শিশুর অভিভাবকরা মুখ খোলেননি। সে কারণে এ তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেশীরা জানায়, ডা. কাজী সজীব ও আসমা খাতুনের দুই সন্তান। বড় সন্তান মেয়ে কাজী মাহি তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। চার বছরের ছেলে কাজী ফারহান ছোট। তাকে এখনও স্কুলে ভর্তি করা হয়নি। কাজী ফারহানের বয়স মাত্র ৪ বছর হলেও সে কথায় বেশ পটু। প্রতিবেশীদের সাথে ভাব-খাতির জমানোয় তার জুড়ি নেই। প্রতিবেশীদের ধারণা এই অপহরণ চক্রের সঙ্গে স্থানীয় কেউ জড়িত থাকতে পারে। তারা জানান, কাজী ফারহান অপহরণের পর থেকে তার পরিবারে শোকের মাতম চলছে। ফারহানের ভাগ্যে কী জুটেছে বা কী জুটবে তা নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আছে তারা।
এদিকে, এ মাসুম শিশু অপহরণের পর শিশুটির মা-বাবা, দাদা-দাদিসহ নিকটজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। বাড়িতে কান্নার রোল। গভীর রাত পর্যন্ত বাড়িতে প্রতিবেশীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ব্যবসায়ী মানোয়ার হোসেনের পর দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর খোদ আলমডাঙ্গা শহরে অপহরণের ঘটনা ঘটলো। খোদ শহরে শিশু অপহরণের ঘটনা এলাকাবাসীকে নতুন করে আতঙ্কিত করে তুলেছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ