বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরুর সন্ধান মিলেছে সাভারের আশুলিয়ায়। মাত্র ২০ ইঞ্চি উচ্চতা, লম্বায় ২৩ ইঞ্চি এবং ২৬ কেজি ওজনের বক্সার ভূট্টি জাতের খর্বাকায় এই ছোট গরুরটির নাম রাখা হয়েছে রাণী। ইতোমধ্যে গরুটির মালিক ‘শিকড় এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ এর স্বাত্তাধিকারী আবু সুফিয়ান রাণীকে বিশ্ব রেকর্ডে জায়গা করে দিতে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে বিশ্বে ছোট গরুর রেকর্ডে ভারতকে পেছনে ফেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
শিকড় এগ্রো লিমিটেড এর ম্যানেজার এম এ হাসান হাওলাদার বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির মালিক ইন্টারনেট ঘেটে জানতে পেরেছেন এটিই পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ছোট গরু। এটি এখন কোরবানির উপযুক্ত হলেও এই মুহূর্তে আমরা তাকে বিক্রির কথা ভাবছি না। ইতোমেধ্য এর দাম উঠেছে প্রায় ৬ লাখ টাকা।’ রাণীকে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডে রেকর্ডভুক্ত করতে গত ২ জুলাই রাত ১২টার পর আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনের পর গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ একটি রিপ্লাই দিয়ে জানিয়েছে- তাদের নিজস্ব কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। ওই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী কার্যক্রমগুলো শেষ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে তারা।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী- এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরুটি রয়েছে ভারতের কেরালা রাজ্যে। ৪ বছর বয়সী ওই গরুটি লাল রঙের। যেটির উচ্চতা ২৪ ইঞ্চি (২ ফুট)। আর ওজন ৪০ কেজি। গরুটির নাম ‘মানিকিয়াম’। ভারতের গরুটি ল্যাব্রাডার কুকুরের চেয়েও ছোট। এর মালিক অক্ষয় এনভি নামের এক ব্যক্তি। তবে সাভারের আশুলিয়ার চারিগ্রাম এলাকার সিংঙ্গাপুর ট্রেনিং সেন্টারের পাশে অবস্থিত শিকড় এগ্রো লিমিটেডের ‘রাণী’ ভারতের ‘মানিকিয়াম’ এর চেয়েও বয়স, ওজন ও উচ্চতায় কম। ‘বক্সার ভূট্টি’ জাতের এই খর্বাকৃতির গরুটির বয়স এখন মাত্র ২৩ মাস। শিকড় এগ্রো লিমিডেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর স্বত্তাধিকারী আবু সুফিয়ান বলেন, প্রায় ১১ মাস আগে নওগাঁর বাবু নামে এক ব্যক্তির খামার থেকে গরুটিকে সংগ্রহ করে সাভারে নিয়ে আসি। এরপর ২৩ মাস গরুটিকে লালন পালন করে সঠিক পরিমাণ খাবার দিলেও তার ওজন বাড়ে না এবং উচ্চতাও বাড়ে না। এরপর আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকি। এর মধ্যেই উৎসুক এলাকাবাসী গরুটিকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমায়।
তিনি আরও জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই বলছেন গরুটিকে কোরবানির হাটে চড়াদামে বিক্রি করতে। কিন্তু আমি রাণীকে এই মুহূর্তে বিক্রির কথা ভাবছি না। কিছু সৌখিন ক্রেতা ইতোমধ্যে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন যারা গরুটিকে কিনে লালন পালন করতে চায়।
সাভার উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাজেদুল ইসলাম জানান, গরুটির বিষয়ে আমরা শুরু থেকেই জানি। নিয়মিত খোঁজ খবরও নিচ্ছি। ভূট্টি জাতের গুরুগুলো এমনিতেই ছোট সাইজের হয়ে থাকে। তবে এই গুরুটি ভূট্টি জাতের মধ্যেও আরও ভূট্টি, মানে খুবই ছোট সাইজের। গরুটি বর্তমানে পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে এবং এর উচ্চতা এবং ওজন বাড়ার সম্ভাবনা নেই।