স্টাফ রিপোর্টার: গোসল করতে নেমে পুকুরের পানিতে তিন শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে। ফুলের মত তিনটি তাজা প্রাণের অকাল প্রয়াণে বাকরুদ্ধ সবাই। সান্ত¡না দেয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে আত্মীয় স্বজন-প্রতিবেশীরা। গ্রামজুড়ে চলছে শোকের মাতম। সোমবার দুপুরে বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামে পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো, ওই এলাকার হারুন মোল্যার মেয়ে তমা (৮), কামরুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া (৯) ও সাঈদ মোল্যার ছেলে হোসাইন (৮)। তারা একই পাড়ার বাসিন্দা। নিহত সুমাইয়ার বাবা কামরুল বিলাপ করতে করতে তিনি বলেন, আমার মেয়েটা ছিলো একেবারেই শান্ত প্রকৃতির, হাসি ছাড়া কথা বলতো না, লেখাপড়ায় ছিলো খুবই মনোযোগী, এমন লক্ষ্মী মেয়েকে হারিয়ে আমি কীভাবে বাঁচবো বলেই বুক চাপড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সুমাইয়ার মা গুনজার বেগম বলেন, সুমাইয়া স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস থ্রিতে পড়ে। সকালে স্কুলে গিয়েছিলো না খেয়ে। স্কুল থেকে ফিরেই বলে মা ভাত দাও। তাকে বলি গোসল করে আই। ভাত দিচ্ছি। পরে চাচাতো বোন তমার সাথে গোসল করতে যায়। গোসল করতে যেয়ে আর ফেরেনি তমা। আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, দুই বছর আগে ক্যান্সারে হারিয়েছি মিঠুন নামে ১০ বছরের ছেলেকে। এরপর শান্তারেও হারালাম। এখন কাকে নিয়ে বাঁচবো আমরা। আকাশপানে দুইহাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ জানান- ‘আমার প্রাণডা নিয়ে আমার মেয়ের প্রাণডা ফেরত দাও আল্লাহ……! প্রতিবেশী হাসান আলী নামে এক যুবক বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তমা, সুমাইয়া ও হোসাইন স্কুল থেকে ফিরে গোসল করতে নামে। তিনজনই একসঙ্গে ডুব দিয়ে আর ওঠেনি। দীর্ঘক্ষণ ধরে তারা তিনজনই না উঠলে; ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক শিশু নাহিদ শান্তার মাকে বলে শান্তারা ডুবে গেছে। শান্তার মায়ের চিৎকার শুনে আমরাও পুকুরে নেমে পড়ি। প্রায় ঘণ্টাখানেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও তাদের খোঁজ মিলে না। পরবর্তীতে এলাকার প্রায় ৫০ জন মিলে কয়েকটি জাল ফেললে তাদের পাওয়া যায়। উদ্ধার করে তিনজনকেই বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।