স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করায় এবং ফুসফুস ও পায়ে পানি জমার কারণে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় চিকিৎসকরা তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। হাসপাতালের ১০ বি ওয়ার্ডের ১০২০৪ নম্বর কেবিনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. আরিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক চিকিত্সার পর অধিকতর পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন কয়েক দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। তার শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করায় তাকে নেয়া হয় এভার কেয়ার হাসপাতালে। এরপর তার সিটি স্ক্যানসহ কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। কিডনি ও লিভারের পরীক্ষার জন্য তাকে কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
গতকাল বেলা সাড়ে ৩টায় গুলশানের বাসা থেকে রওনা দিয়ে বিকেলে ৪টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এ সময় তার গাড়িতে গৃহকর্মী ফাতেমা ছিলেন। পরে গাড়ি থেকে হুইল চেয়ারে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তার সঙ্গে কথা বলেন। খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে এমন খবরে তাকে এক নজর দেখতে দুপুর থেকেই বিভিন্ন পর্যয়ের নেতাকর্মীরা সেখানে ভিড় করেন। গুলশানে বাসভবন থেকে রওনা দেয়ার আগে বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক দলের সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ডা. আল মামুন এবং বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
খালেদা জিয়া অনেক বছর ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়াসহ তার বাসার আট কর্মী করোনায় আক্রান্ত হন। ২৭ এপ্রিল তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ৫৩ দিন হাসপাতালে থাকার পর ১৯ জুন রাতে বাসায় নেয়া হয় খালেদাকে। এরপর একবার এভারকেয়ার হাসপাতালে চেক-আপের জন্য নেওয়া হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার পুনরায় তাকে সেখানে ভর্তি করা হলো। এর মধ্যে করোনার টিকা নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়া দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে যান। ১৯ জুলাই করোনার প্রথম ডোজ টিকার নেয়ার পর ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন তিনি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ