স্টাফ রিপোর্টার: যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনে গম উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। এ দেশটি থেকে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে গমের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারে গমের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকেও গম রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সরাসরি দেশের বাজারে। হুহু করে বাড়ছে আটা-ময়দার দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পণ্যটির দাম ১০-১২ টাকা বেড়েছে। ফলে আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি পাউরুটি, বিস্কুট, চানাচুর, নুডলস জাতীয় খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। আবার কোনো কোম্পানি দাম না বাড়ালেও পরিমাণে কমিয়েছে। এতে আগের চেয়ে মানুষের খরচ বেড়েছে।
এদিকে ২০২১ সালের নভম্বর থেকে গমের দাম বাড়তে থাকে। সেপ্টেম্বরে প্রতি টনের দাম ছিল ২৬৪ ডলার। নভেম্বরে তা বেড়ে হয় ৩৩৫ ডলার। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ৫৩৩ ডলার। এপ্রিলে তা আরও বেড়ে হয় ৬৭৩ ডলার। গত ১৩ মে তা বেড়ে ১ হাজার ১৭৮ ডলারে দাঁড়ায়।
গতকাল শনিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে-খুচরা বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি আটা সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ময়দার দাম ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। আর মাসের ব্যবধানে প্রতিকেজি আটা সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও ময়দার দাম ১৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া বছরের ব্যবধানে খোলা আটার দাম ৫০ শতাংশ ও খোলা ময়দা ৬৭ শতাংশ বেড়েছে।
সূত্রমতে, অভ্যন্তরীণ বাজারে গমের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাময়িকভাবে পণ্যটি রপ্তানি বন্ধের কথা জানিয়েছে ভারত। তবে শুক্রবার বা তার আগে গম রপ্তানিতে যেসব দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে সেগুলো বহাল থাকবে। শুক্রবার রাতে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর এক ঘোষণায় এ তথ্য জানায়। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে গম উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দামও বাড়ছে। আর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে মিত্রদেশগুলো রাশিয়া থেকে গম আমদানি করতে পারছে না। এতে ভারত থেকে গম আমদানিতে ঝুঁকেছিল বিশ্বের বহু দেশ। কিন্তু দেশটির স্থানীয় বাজারে গমের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধিতে শেষ পর্যন্ত গম রপ্তানি বন্ধের পথে হাঁটল ভারত সরকার।
এদিকে চীন ১৩ কোটি ৪৩ লাখ টন, ভারত ১০ কোটি ৭৬ লাখ টন, রাশিয়া ৮ কোটি ৫৯ লাখ টন, যুক্তরাষ্ট্র ৪ কোটি ৯৭ লাখ টন, কানাডা ৩ কোটি ৮২ লাখ টন ও ইউক্রেন ২ কোটি ৫০ লাখ টন গম উৎপাদন করে। বিশ্বে মোট গমের ৩৪ শতাংশ রপ্তানি করে ইউক্রেন ও রাশিয়া। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধের কারণে রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ইউক্রেনের সামুদ্রিক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় রপ্তানি করতে পারছে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করায় তারা গম রপ্তানি করতে পারছে না।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরকীয়া প্রেম জানাজানি হওয়ায় লোকলজ্জায় প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ