বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ দখল বর্জনে ভোট সম্পন্ন : সহিংসতায় একজন নিহত
২৮ পৌরসভায় আ.লীগের জয় একটিতে বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার: পঞ্চম ধাপের পৌরসভা ভোটে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার নির্বাচনি সহিংসতায় সৈয়দপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী নিহত হয়েছেন। চারঘাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া কয়েকটি পৌরসভায় ককটেল বিস্ফোরণ, কেন্দ্র দখল ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকটি পৌরসভার কয়েকজন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। বাকি পৌরসভাগুলোয় তেমন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে সহিংসতায় একজন ও ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ভোটের দিন বিজয়ী কাউন্সিলর খুন হন। রোববার পঞ্চম ধাপের ২৯ পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া একইদিন ঝিনাইদহের শৈলকুপা, ফরিদপুরের মধুখালী, রাজশাহীর পবা ও কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং চতুর্থ ধাপে স্থগিত হওয়া নরসিংদী পৌরসভার চারটি, শরীয়তপুরের দুটি ও সোনাইমুড়ীর একটি কেন্দ্রে ভোট হয়। এদিকে পঞ্চম ধাপে ২৮টি পৌরসভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন। অপরদিকে বিএনপি ১টি ও স্বতন্ত্র ১টিতে জয় পেয়েছেন। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাদারীপুরের শিবচর, চট্টগ্রামের মীরসরাই ও রাউজানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পান। গতকাল ভোটে ২৫টিতে জয় পেলো দলটি। সবমিলিয়ে ২৮টি পৌরসভায় জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা।
অপরদিকে চারটি উপজেলা পরিষদের সবকটিতে ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যানরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া স্থগিত শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার দুটি কেন্দ্রে ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনি সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, কোনো মৃত্যুই কাক্সিক্ষত নয়, এ জন্য আমরা সবাই দুঃখিত। তিনি বলেন, ২৯টি পৌরসভা, চারটি উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন এবং জেলা পরিষদের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মনিটরিং সেল ঘণ্টায় ঘণ্টায় যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে, তাতে এখন পর্যন্ত যা বুঝতে পেরেছি, দেশে যে নির্বাচনটি হয়েছে, তা উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে।
যারা মেয়র পদে নির্বাচিত হলেন পঞ্চম ধাপে আওয়ামী লীগের মেয়র নির্বাচিত হলেন যারা জয়পুরহাট সদরে মো. মোস্তাফিজুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে মো. আব্দুর রশিদ, রাজশাহীর চারঘাটে মো. একরামুল হক ও দুর্গাপুরে মো. তোফাজ্জল হোসেন, ঝিনাইদহের মহেশপুরে মো. আব্দুর রশিদ খান ও কালীগঞ্জে মো. আশরাফুল আলম, যশোরের কেশবপুরে রফিকুল ইসলাম, ভোলা সদরে মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও চরফ্যাশনে মো. মোরশেদ, জামালপুরের ইসলামপুরে মো. আব্দুল কাদের সেখ, মাদারগঞ্জে মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির ও জামালপুর সদরে মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, ময়মনসিংহের নান্দাইলে মো. রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মো. ইফতেখার হোসেন, মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আবু নাঈম মো. বাশার, মাদারীপুর সদরে মো. খালিদ হোসেন, হবিগঞ্জ সদরে আতাউর রহমান সেলিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে নায়ার কবির, চাঁদপুরের মতলবে মো. আওলাদ হোসেন, ও শাহরাস্তিতে হাজী আবদুল লতিফ, লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মো. গিয়াস উদ্দীন রুবেল ভাট, চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে গিয়াস উদ্দিন, বারইয়ারহাটে মোহাম্মদ রেজাউল করিম ও রাঙ্গুনিয়ায় মো. শাহজাহান সিকদার, গাজীপুরের কালীগঞ্জে এসএম রবীন হোসেন এবং নীলফামারীর সৈয়দপুরে রাফিকা আকতার জাহান। বগুড়া সদর পৌরসভায় বিএনপির মো. রেজাউল করিম বাদশা ও রংপুরের হারাগাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এরশাদুল হক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ফরিদপুরের মধুখালীতে আওয়ামী লীগের মো. শহিদুল ইসলাম, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় একই দলের মো. আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহীর পবায় ইয়াসিন আলী ও ঝিনাইদহের শৈলকুপায় শেফালী বেগম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।