স্টাফ রিপোর্টার: করোনা মহামারী গোটা বিশ্বকে প্রায় তছনছ করে ফেলেছে। গত দশ মাসে মৃত্যু আতঙ্ক ঘিরে রেখেছে মানবজাতিকে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সবাই ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় আছেন। বিশ্বের দেশে দেশে গবেষক-বিজ্ঞানীরা নিরন্তর প্রচেষ্টার পর ইতিমধ্যে পাঁচটি টিকা মানবদেহ সুরক্ষায় প্রয়োগের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে আগামী মাসে বিশ্ব দুটি কোভিড-১৯ টিকা পাচ্ছে, যেগুলোকে খুবই কার্যকর বলা হচ্ছে। ভ্যাকসিন প্রস্তুতিকারী মার্কিন কোম্পানি ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা জরুরিভাবে ব্যবহারের জন্য মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এফডিএ আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুমোদন প্রদান করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনার ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের প্রধান মনসেফ সালাউই জানিয়েছেন, প্রথম টিকা ১১ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেয়া হতে পারে। ওই একই সময়ে যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে টিকা প্রয়োগের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে (এনএইচএস) এ জন্য আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে এসব টিকা বাংলাদেশের জনগণ কবে পাবেন -তা নিয়ে সুস্পষ্ট কোন বক্তব্য নেই। সরকার বলছে, সব কিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি টিকাটি বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি হিসাবে বাংলাদেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের জন্য ৩৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হতে পারে। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি ডোজের নিশ্চয়তা মিলেছে। এর মধ্যে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরামের কাছ থেকে ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। এই ভ্যাকসিনের দাম প্রতি ডোজ ৫ ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ৪২৫ টাকা। এছাড়া ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ করোনার ভ্যাকসিনে ভর্তুকি দেবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ইমিউনাইজেশনে অর্থায়ন করা দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভি। একজন মানুষ দুই ডোজ করে এই ভ্যাকসিন পাবেন। এই ডোজের দাম পড়বে ১৩৮ থেকে ১৭০ টাকা। একটি ডোজের ২৮ দিন পর আরেকটি ডোজ দিতে হবে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষের ভ্যাকসিনের (দুই ডোজ করে) জন্য সরকার চুক্তি করেছে বলে জানা গেছে। চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন অনুমোদনের পর প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ দেশে আসবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশের ১৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের জন্য করোনা ভ্যাকসিন কিনতে প্রয়োজন ২১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। করোনা ভ্যাকসিন কিনতে দাতা সংস্থাগুলোর কাছে ঋণ সহযোগিতা চেয়ে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ