স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর বনানীতে জঙ্গি সন্দেহে অভিযান পরিচালনার পর সেটিকে রুটিন অভিযান বলে অভিহিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার আব্দুল আহাদ। এ ঘটনায় শনিবার ১১টায় করা সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বনানী-কাকলী এলাকায় আমরা বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। এটা পুলিশের রুটিনমাফিক কাজ। আমরা যেখানেই কোনো জঙ্গি, সন্তাসী, চাঁদাবাজির সংবাদ আসছে, সেখানেই ব্লকরেইড হচ্ছে। আজকে হয়তো এখানে ব্যাপক আকারে খুব বেশি ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়েছি, যেটা মিডিয়ার নজরে এসেছে। এটা পুলিশের একান্তই রুটিনমাফিক কাজ। এর বাইরে অন্য কিছু না। কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ ব্লকরেইড দেয়, তল্লাশি চালায় অবশ্যি কোনো তথ্য থাকলে। এখানে আমরা যখন অভিযান চালাই, এর আগের কিছু তথ্য আমাদের কাছে ছিল। এখানে জঙ্গি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী থাকতে পারে এমন একটা গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুরো এলাকাকে কর্ডনের মধ্যে এনে ব্লকরেইড চালিয়েছি। পুলিশের প্রতিদিনের কার্যক্রমের মধ্যেই এই কাজটি হয়েছে। আমরা প্রায় ২ ঘণ্টা কাকলী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। আমরা বেশ কিছু হোটেল, মেসে অভিযান চালিয়েছি। দুই ঘণ্টার অভিযানে আমরা যাদের খুঁজছি, এমন কাউকে পাইনি। আজকের এই অভিযানে কাউকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। অন্য এলাকায় এখন অভিযান চলবে। এর আগে, অপর এক সংবাদ সম্মেলনে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল আদালত থেকে পালানো জঙ্গি এবং তাদের অনুসারীরা এই এলাকায় রয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা রাজধানীর বনানীর কাকলী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছি। এর আগে অভিযানের এক পর্যায়ে রাত ১০ টার দিকে কাকলির ‘ঢাকা মেসে’ অভিযান চালায় পুলিশ। ঢাকা মেসের ৭টি কক্ষের প্রতিটিতে প্রবেশ করে তল্লাশি করে পুলিশ। পরে সন্দেহজনক কিছু না পাওয়ায় সাড়ে ১০টার দিকে মেসটি থেকে নেমে আসে পুলিশ। অভিযানের বিষয়ে মেসটির কেয়ারটেকার শহীদুল ইসলাম বলেন, আমাদের মেসটিতে সাতটি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটির কক্ষে অধিকাংশ অতিথি বিদেশগামী লোকজন। এছাড়া বিদেশ যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসা লোকজনও রয়েছে। আমাদের মেসের অধিকাংশ অতিথি গ্রামের লোকজন। ভাড়া অল্প হওয়ায় গ্রামের বিদেশগামী যাত্রীরা আসেন আমাদের এখানে। একই সময়ে কাকলীর ‘হাজী মেস’ নামে একটি মেসের কক্ষে ছিলেন বগুড়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি মালয়েশিয়াগামী প্রবাসী। মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমাদের কক্ষে আমরা ৪ জন ছিলাম। এর মধ্যে আমরা দুইজন আগামীকাল মালয়েশিয়া যাব বলে আজ এসে মেসটিতে উঠেছি। আর বাকি দুইজন আমাদের স্বজন। রাত ১০টায় পুলিশ আমাদের কক্ষে প্রবেশ করে এবং আমাদের ব্যাগ তল্লাশি করে। তল্লাশির একপর্যায়ে পুলিশ জিজ্ঞাসা করে ‘আমাদের বাড়ি কোথায়, ঢাকায় কেন এসেছে এবং মেসে কেন উঠেছি। আমরা তখন মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা পুলিশকে বলি। পরে আমাদের পাসপোর্ট ও ভিসা চেক করে। এসব দেখে পুলিশ সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের রুম থেকে বের হয়ে যায়। তিনি বলেন, পুলিশ নেমে যাওয়ার পর বের হয় অন্য কক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছেও পুলিশ জানতে চেয়েছে তারা কেন ঢাকায় এসেছে। অন্যসব কক্ষের অধিকাংশ লোকজনও বিদেশগামী। তাদের পাসপোর্ট ও ভিসা দেখে পুলিশ নেমে যায়।