স্টাফ রিপোর্টার: উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও উন্নত হওয়ায় জনগণের মাঝে ভোট না দেয়ার মানসিকতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন শেষে প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। মো. আলমগীর বলেন, ‘চসিক সিটিতে উপস্থিতি একটু কম ছিলো। কারণ আপনারা দেখেছেন যে, শুধু চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে না, যেকোনো বড় শহরে নির্বাচন যখন হচ্ছে বিশেষ করে ভাসমান লোকজন বেশি থাকে, বাইরের লোকজন বেশি থাকে, সেখানে একটু উপস্থিতিটা একটু কম হয়। চট্টগ্রামে আমরা আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। দেখা গেছে যে, ভোটার উপস্থিতি আশার চেয়ে একটু কমই হয়েছ।’ এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এখানকার নাগরিকরা কেন যেনো রাষ্ট্রের প্রতি তাদের একটা দায়িত্ব যে আছে, ভোট যে তার অধিকার, এটা তারা মনে করছেন না। ভোটের দিন তারা মনে করেন যে, কী কষ্ট করে যাবো, কেন ভোট দেবো, ভোট দিয়ে আমার লাভ কী-এ ধরনের মন মানসিকতা হয়ে গেছে। এটা দেখবেন যে, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরকম হয়।’ চসিক নির্বাচনে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, বিরোধীদলের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কোথায় হলো? ৭৩৫টা কেন্দ্র, তার মধ্যে মাত্র ২টা কেন্দ্রে ইভিএম ভাঙচুর করা হয়েছে। ইভিএম না ভাঙলে সেখানে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হতো। ইভিএম ভাঙায় সেখানে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে।’ সহিংসতার পরেও ভোট শান্তিপূর্ণ বলা যায় কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘৭৩৫টা কেন্দ্রের মধ্যে দুইটা কেন্দ্রে সহিংসতা হয়েছে। এটাকে কী বলবেন? পারসেন্টেজ করেন। কত শতাংশ হয়। শান্তিপূর্ণ কত, আর অশান্তিপূর্ণ কত?’ মো. আলমগীর আরো বলেন, ‘গণমাধ্যম থেকে যেটুকু দেখেছি এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে যে প্রতিবেদন পেয়েছি, আমরা বলবো ভালো নির্বাচন হয়েছে। তবে দুটি কেন্দ্রে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোকজন যারা ইভিএমে ভোট হোক চান না, তারা ওখানে আক্রমণ চালিয়েছিলো। ইভিএম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমরা ওই দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে দিয়েছি। এছাড়া অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হয়েছে। যারা ভোট দিতে এসেছিলেন, তারা ভোট দিয়ে গেছেন।’ সহিংসতার প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, ‘আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এ ধরনের নির্বাচনগুলোতে কিছু ঘটনা ঘটে। তার হিসেবে যদি বলেন, তাহলে বলব যে বরঞ্চ কমই হয়েছে। মাত্র দুটি কেন্দ্রে সহিংসতা হয়েছে। যারা দুষ্কৃতিকারী থাকেন, তারা এগুলো করার চেষ্টা করেন। বিশেষ করে ইভিএমে ভোট হলে অনেকেই মনে করেন যে, জাল ভোট দেয়া যাবে না। তারাই সাধারণত এগুলো করে থাকে। কিছু লোক তো থাকেই এরকম। তারপরও আমরা চট্টগ্রামের ভোট সুষ্ঠু করার জন্য প্রায় ২০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কর্মরত ছিলো। কমিশনের পক্ষ থেকে যতোরকম ব্যবস্থা নেয়ার দরকার, তা নেয়া হয়েছিলো।’
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ