জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস ঢাকায়

স্টাফ রিপোর্টার: চার দিনের সফরে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস। তাকে বহনকারী এমিরেটসের এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮৬) গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ২৬ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বিমানবন্দর থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যান। বাংলাদেশে জাতিসংঘ মহাসচিবের এটি দ্বিতীয় সফর। তার এই সফর রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধিতে এবং এই সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ ফেরাতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে ঢাকা। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রফিকুল আলম জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস রমজান সংহতি সফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এসেছেন। সফরকালে তিনি প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠকে অংশ নেবেন। আজ শুক্রবার সফরের দ্বিতীয় দিন সকাল ৯টায় হোটেলে গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। পরে জাতিসংঘ প্রধান সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রোহিঙ্গা সমস্যা ও সমাধান সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ আলোচনায় স্থান পাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

জানা গেছে, বৈঠকে আরো গুরুত্ব পেতে পারে অন্তর্বর্তী সরকারের গণতন্ত্রে উত্তরণ ও মানবাধিকার ইস্যু। বৈঠকের পর গুতেরেস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য কক্সবাজার যাবেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক কক্সবাজার বিমানবন্দরে গুতেরেসকে অভ্যর্থনা জানাবেন। কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন। দুই নেতা অনুষ্ঠান চলাকালে রোহিঙ্গা, ইমাম এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। রাতেই ঢাকায় ফিরবেন তারা। আগামীকাল শনিবার সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করবেন, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেবেন। বিকেলে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি যুব সমাজের সঙ্গে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পরে গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদের সঙ্গে একটি যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখবেন। এরপর তিনি তার সম্মানে প্রধান উপদেষ্টা আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন। আগামী রবিবার সকালে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুনরায় গতিশীল হবে এবং চলমান সংকটের দ্রুত ও গ্রহণযোগ্য সমাধানকল্পে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরালো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বৈশ্বিক বিভিন্ন সংকটের কারণে রোহিঙ্গা সমস্যা এখন অনেকটাই আড়ালে চলে গেছে। আমরা আশা করি, জাতিসংঘ মহাসচিব শক্তিশালী ও ইতিবাচক বার্তা দেবেন, যা রোহিঙ্গাদের দ্রুত সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে সহায়ক হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More