স্টাফ রিপোর্টার: আগামী সংসদ নির্বাচনসহ দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেছে বিএনপি। সোমবার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের কাছে এ অবস্থান তুলে ধরেন দলটির নেতারা। জাতিসংঘ সমন্বয়কের রাজধানীর গুলশানের বাসভবনে দুপুর ১টা থেকে সোয়া ৩টা পর্যন্ত তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকর বিষয়ে জানতে চাইলে শামা ওবায়েদ বলেন, মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণে তারা আবাসিক সমন্বয়ের বাসায় গিয়েছিলেন। মধ্যাহ্নভোজের ফাঁকে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সার্বিক রাজনৈতিক বিষয়ে কথা হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে রাজপথে আন্দোলন করছে বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করে, বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ বারবার উদ্যোগ নিয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এবারও জাতিসংঘের বিশেষ ভূমিকা প্রত্যাশা করে বিএনপি। দলটির নেতারা বিভিন্ন সময়ে ঘরোয়া আলোচনায়ও এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। এই অবস্থায় ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠকের বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, দুই ঘন্টার এই বৈঠকে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের গুম খুন, গায়েবি মামলা, গ্রেফতার, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়েও কথা হয় বৈঠকে। এছাড়াও দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও তার বিদেশে চিকিৎসার করাতে মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশের বিষয়টি তুলে ধরেন বিএনপি নেতারা। বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বিএনপি তাদের যুক্তি তুলে ধরেছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে কী হয় সে সম্পর্কে বিএনপির কাছ থেকে ধারণা পেয়েছে জাতিসংঘ সমন্বয়ক। বৈঠকে বিএনপি নেতারা বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের অতীতের ভূমিকা প্রশংসা করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাস খানেক আগে ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তখনকার জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো ঢাকায় এসেছিলেন। মাত্র তিন দিনের সফরে ২০টির বেশি বৈঠক করলেও সমঝোতায় পৌঁছুতে পারেনি। তবে জাতিসংঘের ওই উদ্যোগে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। কয়েক মাস ধরে নির্বাচনকালী সংকট নিয়ে সরকারি দলসহ রাজনৈতিক দলগুলোর দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। ১৬ এপ্রিল মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গেও তার রাজধানীর বাসায় বৈঠক করেছিলেন বিএনপি নেতারা। এর আগে ১৬ মার্চ ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার আমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশ নেন দলের একটি প্রতিনিধি দল। একই সময়ে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও বিএনপি নেতাদের বৈঠক হয়।