স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি তো বলে দিয়েছি-তারা যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে, তাহলে পুলিশ যেন তাদের বাধা না দেয়। বিশেষ করে বাংলামোটরে যে বাধা দেয়া, সেটা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি। আসুক না হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে। কোনো আপত্তি নেই। আমি তাদের বসাব, চা খাওয়াব। কথা বলতে চাইলে শুনব। কারণ, আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনো বাধা নেই। তিনি আরও বলেন, তবে বোমাবাজি ও ভাঙচুর করলে বাধা দেয়া হবে এবং উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। শনিবার বিকালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক যৌথ সভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে ঢাকায় অন্য একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে সারা বিশ্বে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তা বাংলাদেশেও পড়েছে। এতে হতাশ হওয়ার মতো কিছু নেই। যখন যে অবস্থা হবে, তা মানিয়ে নিয়েই আমাদের চলতে হবে। কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বিকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। যৌথ সভায় শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমরা বিদ্যুতের লোডশেডিং দিচ্ছি। কারণ, ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে। এলএনজির দামসহ প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। যে জার্মানির সুর তুলেছিল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না-তারা আবার সেটাতেই ফিরে গেছে। খাদ্য সরবরাহ পুনরায় চালু করতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তি করায় জাতিসংঘের মহাসচিব ও তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাদের উদ্যোগের ফলে বিশেষ করে জাতিসংঘের মহাসচিবের উদ্যোগে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এর ফলে কৃষ্ণসাগরের বন্দর ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হবে। খাদ্যদ্রব্য কেনা যাবে, আনা যাবে। আমি মনে করি, এটা আমাদের জন্য স্বস্তির বিষয়। এর মাধ্যমে খাদ্যের অভাব থাকবে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বৃক্ষরোপণ, খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মৎস্যচাষে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমি পড়ে না থাকে, সেজন্য সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যে যা পারেন উৎপাদন করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম, ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত বিশ্বেও খাদ্য সংকট ও মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবাই বিদ্যুৎ সাশ্রয় করছে। ইংল্যান্ড-আমেরিকাসহ সব জায়গায় একই অবস্থা। কাজেই সবাইকে সঞ্চয় করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় মানবতার সেবা করে আসছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগ সব সময় সবার আগে এগিয়ে যায়। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকলে জনগণের সেবা করি। আর বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অর্থ পাচার, মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। কারণ তারা মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসে। নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যদি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো শৃঙ্খলা এসে থাকে, সেটা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। আমরা মহাজোট করেছিলাম, আমরা দলের পক্ষ থেকে মহাজোটের পক্ষ থেকে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। শুধু তাই না, ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। যাতে সিল মেরে বাক্স ভরতে না পারে। তিনি বলেন, বিএনপির আমলে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করা হয়েছিল। এটা থাকলে আর ভোট করা লাগে না। ১০ হোন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। এই তো ছিল। মাগুরার নির্বাচন, ঢাকা-১০ আসনের নির্বাচন। এগুলো আমাদের দেখা। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় এ দেশের জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাসী। আমরা সেটাই বিশ্বাস করি। সেজন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে যতটা উন্নতি হয়েছে, সেটা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে। তিনি বলেন, যারা অবৈধ ক্ষমতা দখল করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে; অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষমতা নিয়ে সংবিধান সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়; যাদের এ ধরনের মানসিকতা-তারাই ভোট চুরি করে। জিয়াউর রহমান, এরশাদ তাই করে গেছেন। আর খালেদা জিয়া তো গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতা এসেছিল। আরেকবার জামায়াতের হাত ধরে এলো।
পূর্ববর্তী পোস্ট
চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদসহ সারাদেশে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ