স্টাফ রিপোর্টার: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১৪টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আজ বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সময় তাদেরকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কারিগরি দিক দেখানো হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কারিগরি বিশেষজ্ঞদের পাঠানোর অনুরোধ জানায় ইসি। যদিও ইভিএম প্রদর্শনীতে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবিসহ কয়েকটি দল অংশ নেবে না বলে জানা গেছে। এর মধ্য দিয়ে তিন ধাপে আয়োজিত ইভিএমের কারিগরি দিক প্রদর্শনী আজ শেষ হচ্ছে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আরও জানা গেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী আজ ১৩টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রথম ধাপে থাকা গণফোরাম ইভিএম প্রদর্শনীতে আসতে পারেনি। তাদের আজ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ নিয়ে ১৪টি দলকে এ ধাপে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কমিশন।
দলগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) ও গণফোরাম। তবে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসির এ সংলাপে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, মতবিনিময় সভায় আমরা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার মূল কারণ হচ্ছে বর্তমান ইসির জন্য কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন একটা পরীক্ষাস্বরূপ ছিল, যাতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। যাদের পক্ষে একটা সিটি নির্বাচন করা সম্ভব না, তাদের পক্ষে সমগ্র বাংলাদেশের নির্বাচন করা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, মতবিনিময় সভায় আমাদের দল অংশগ্রহণ করছে না। কেন করছি না তা লিখিতভাবে কিছু প্রস্তাবসহ নির্বাচন কমিশনে আমরা পাঠিয়েছি। আমাদের দল মনে করে নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনি পরিবেশ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা অর্জন ছাড়া নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। বর্তমান কমিশনও যে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না তার কিছু লক্ষণ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি অংশ নেবে না। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি চালু করার কোনো অবকাশ নেই। ইভিএম সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন বরাবর পার্টির ৭ দফা বক্তব্য পাঠিয়েছি। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আশা করে নির্বাচন কমিশন ইভিএম নিয়ে তাদের তৎপরতা থেকে সরে আসবেন এবং ভেঙে পড়া নির্বাচনি ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে মনোযোগী হবে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আমরা যাচ্ছি না। ইভিএম নিয়ে ইতোমধ্যে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে এ যন্ত্র জনগণের মাঝে বিশ্বাস অর্জন করেনি। নির্বাচন কারা পরিচালনা করবে, তখনকার প্রশাসনিক পজিশনটা কি থাকবে-তা ফয়সালা আগে দরকার। তা না করে এখন ইভিএম উন্নততর করলাম নাকি করলাম না এটা খুব প্রয়োজনীয় বলে মনে করি না।
তবে যুক্তফ্রন্টে থাকা বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ এ প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে। এ বিষয়ে ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া বলেন, আমরা ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল যাব। আমাদের পরামর্শ থাকবে নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তারপর নির্বাচন করতে হবে। আর ইভিএম পদ্ধতির ওপর জনগণের কোনো আস্থা নেই। এ ব্যবস্থায় নির্বাচন না করাই ভালো।