লজ্জার হার বাংলাদেশের
শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে ২০৯ রানের বড় ব্যবধানে পরাজয় দেখলো বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ড্র করলেও দ্বিতীয় টেস্টে পাত্তাই পায়নি সফরকারিরা। স্বাগতিকদের ৪৩৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মার ২২৭ রানেই ভেঙ্গে পড়ে টাইগার শিবির। ২০৯ রানের বিশাল হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা।
আলোকস্বল্পতায় ৫ উইকেট হাতে রেখে চতুর্থ দিন শেষ করে টাইগাররা। স্কোরবোর্ডে রান তখন ১৭৭। ফলে শেষদিন জয়ের জন্য বাকি থাকে আরও ২৬০ রান। মাঠে তখন ব্যাট হাতে দুই টাইগার মেহেদী হাসান মিরাজ ও লিটন দাস। পঞ্চম দিনে তাই হয়তো জয়ের একটা ক্ষীণ আশাও ছিল। কিন্তু পঞ্চম দিনের শুরুতেই মিরাজের সঙ্গে জুটি ভেঙ্গে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। দিনের তৃতীয় ওভারেই অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার প্রবীণ জয়াবিক্রমের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি। ৪৬ বলে ১৭ রান করে ফেরেন লিটন। রিভিউ নিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারেননি তিনি। এরপর আর দাঁড়াতে পারেনি কেউই। লিটনের ফেরার পর আর মাত্র ১০ ওভারের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারায় বাকি ৪ উইকেট। তাইজুল ও তাসকিন ফেরেন যথাক্রমে ২ ও ৭ রানে। এরপর ৩৯ রানে ফেরেন মেহেদি মিরাজ। শেষে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন আবু জায়েদ। শূন্য রানে পরাজিত ছিলেন শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৯৩ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। জবাবে বাংলাদেশ অলআউট হন ২৫১ রানে। ২৪২ রানে পিছিয়ে ছিল টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৯৪ রান করে শ্রীলঙ্কা। ফলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৩৭ রানের। এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পঞ্চম দিনে ২৪ ওভারেই বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে যায় ২২৭ রানে। দুই শতাধিক রানের বিশাল পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা। এর আগে, শ্রীলঙ্কা ২৫৯ রানের লিড নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করলে ৯ উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে তারা। সময় যত গড়িয়েছে, ব্যাটসম্যানদের জন্য উইকেট তত কঠিন হয়েছে। তাই বাংলাদেশকে চতুর্থ ইনিংসে ভুগতে হবে, বিষয়টি ছিল সহজেই অনুমেয়। তাইজুল ইসলামের পাঁচ উইকেট শিকারের কীর্তি তাই ভুলে যেতে সময় নেয়নি বাংলাদেশ। লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো করার সুবাদে যে স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন তাইজুল, খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করার আগেই তা মিলিয়ে গেল। বাংলাদেশ ড্র এর বাস্তবতা মেনে না নিয়ে যেন জয়ের জন্য দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল। সেই ভাব-ভঙ্গি ছিল ব্যাটসম্যানদের চোখেমুখে, উচ্চাভিলাষী শটে। স্কোরকার্ডও তাই বলছে। ইনিংস বড় করার চেষ্টার চেয়েও ছিল রান বাড়ানোর তাড়াহুড়া। চতুর্থ দিনশেষে তাই আক্ষেপ হয়ে ছিল তামিম ইকবালের ২৪, সাইফ হাসানের ৩৪, নাজমুল হোসেন শান্তর ২৫, মুমিনুল হকের ৩২, মুশফিকুর রহিমের ৪০ রানের ইনিংস। যেন সবাই বড় ইনিংসের আভাস দিয়ে সাজঘরে ফেরার পণ নিয়ে নেমেছিলেন! আর পঞ্চম দিন যেন শুধুই আসা-যাওয়ার। মাত্র ২৪ ওভারের মাথায় পাঁচ উইকেট হারিয়ে ইনিংস শেষ করে টাইগাররা।