স্টাফ রিপোর্টার: হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মুক্তি খাতুনের শিশুকাল থেকেই অক্টোপাশের মতো আষ্টেপিষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে কষ্ট। এতিমখানায় কাটে শৈশব। বড় হলে মামা দেখে শুনে বিয়ে দেয় জীবননগরের কাশিপুর চৌধুরীপাড়ায়। বিয়ের পর সুখের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে যে মুক্তি, সেই মুক্তির সংসারে ফুটফুটে পুত্র সন্তানও আসে। এরপরও স্বামী আশাদুল হকের নির্যাতন থেকে মুক্তি মেলেনি মুক্তি খাতুনের। সর্বশেষ তাকে মেরে মুমূর্ষু অবস্থায় স্বামীর ঘরেই আটকে রাখা হয় তাকে। অবশেষে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সারা শরীরে রয়েছে আঘাতের দাগ।
মুক্তি খাতুনের বয়স বর্তমানে ৩০ বছর। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের দক্ষিণ হাসপাতালপাড়ার হতদরিদ্র মোক্তার হোসেনের মেয়ে মুক্তি যখন শিশু তখন তাকে দেয়া হয় সরকারি শিশু পরিবারে। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। বিয়ের উপযুক্ত হলে তাকে তার মামা দেখে শুনে বিয়ে দেন। কাশিপুর চৌধুরীপাড়ার আলিয়ার রহমানের ছেলে আশাদুলের সাথে বিয়ে হলে মুক্তি সুখি হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবে তার কপালে জুটে নির্যাতনের পর নির্যাতন। এ অভিযোগ করে মুক্তি খাতুনের পিতাসহ পিতা পক্ষের লোকজন বলেছেন, যৌতুকের দাবিতে দফায় দফায় নির্যাতন করে আশাদুল। নির্যাতন সহ্য করেও সংসার সাজানোর চেষ্টা করতে থাকে মুক্তি। তার কোলজুড়ে আসে সন্তান। সন্তান আব্দুল্লার বয়স এখন ১০ বছর। এরপরও আশাদুল হক তার স্ত্রীকে নির্যাতন বন্ধ করেনি। গত ১০ সেপ্টেম্বর যৌতুকের দাবিতে নির্মমভাবে মারপিট করে তাকে। লাঠি, লোহার রড দিয়ে মেরে গুরুতর জখম করে ফেলে রাখার খবর পেয়ে পরদিন পিতা পক্ষের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জীবননগর থানায় মুক্তি খাতুনের পিতা মোক্তার হোসেন বাদী হয়ে আশাদুল হকসহ তার কয়েকজন সহযোগীকে অভিযুক্ত করে ন্যায় বিচারের পাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মুক্তি খাতুনের শয্যাপাশে গেলে তিনি বলেন, ‘আমি আর কতো কষ্ট করবো। সেই ছোট বেলা থেকেই কষ্ট করছি। এতিমখানায় থেকে বড় হয়েছি। স্বামীর সংসারে ভালো থাকবে ভেবেছিলাম। কিন্তু তা আর হলো কই? সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছুই বলতে পারি না। এখন আমার কী হবে তাও জানি না।’
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ