শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে অথৈ সাগরে নদী
বেগমপুর প্রতিনিধি: সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে বাবার চোখে ভিন্ন হলেও মায়ের কাছে সমান। আবার কোনো পরিবারে অধিক সন্তানের বোঝা আবার কেউ শুধুমাত্র একটি সন্তানের জন্য করছে হাহাকার। কিছু পরিবারে ছেলে সন্তানকে ভবিষ্যত বংশের রক্ষাকবজ মনে করা হলেও কন্যা সন্তানকে অভিশাপ বা অকল্যাণ হিসাবে দেখা হয়। ফলে কন্যাসন্তান জন্ম দেয়া মাকে শ্বশুর বাড়ির পক্ষ থেকে নানা বঞ্চনার শিকার হতে হয়। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার উজলপুর গ্রামে। স্ত্রী কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় তালাক দিয়ে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে পাষ- স্বামী ইকরামুল হক। কোলের কন্যা শিশুকে নিয়ে অথৈই সাগরে পড়েছেন ছোটসলুয়া গ্রামের নদী খাতুন। সু-বিচারের প্রত্যাশায় পুলিশ সুপারের নিকট করা হয়েছে অভিযোগ।
অভিযোগে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটসলুয়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের মেয়ে নদী খাতুনের দু’বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় বেগমপুর ইউনিয়নের উজলপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে ইকরামুলের সাথে। দাম্পত্য জীবনে বিয়ের এক বছরের মাথায় নদী সন্তান সম্ভাবনা হলে তাকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কয়েক দিনের মাথায় নদীর কোলজুড়ে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে কন্যা শিশু। কন্যা শিশু জন্ম নেবার পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাঁকা চোখে দেখতে থাকে নদীকে। কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে আর পা রাখতে পারে না নদী। সেই থেকে নদী বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছেন। কোলের কন্যা শিশু হুমাইশা খাতুনের বয়স এখন ১১ মাস। স্বামী কিংবা দাদা-দাদী কেউ খোঁজ নেয়নি নদী এবং হুমাইশার। নদীর অপরাধ কন্যা সন্তান জন্ম দেয়া। শেষমেষ কন্যা শিশু জন্ম দেয়ার অপরাধে তাকে তালাকও দেয়া হয়েছে। তালাকপ্রাপ্ত মেয়ে এবং তার শিশু সন্তনটিকে নিয়ে অথৈই সাগরে পড়েছে নদীর পরিবার। কোনো উপায়অন্ত না পেয়ে গতকাল বুধবার বুকভরা আশা নিয়ে ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন হতভাগা নদী। এ ব্যাপারে নদীর স্বামী ইকরামুলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।