গাংনী প্রতিনিধি: মনগড়া, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক, মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের পরিবারকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বানানোর প্রতিবাদে মেহেরপুরের গাংনীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেছুর রহমান মকুলের পরিবার। বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক রফিকুর রশিদ তার ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মেহেরপুর জেলা’ বইটিতে মুকুলের পিতা আব্দুল মান্নানকে শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সাতদিনের মধ্যে এ বই থেকে নাম প্রত্যাহার করে লেখককে ক্ষমা প্রার্থনা করতে আইনী নোটিশ দেয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে গাংনী থানা রোডস্থ নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে আব্দুল মান্নানের মেজ ছেলে ধানখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রন্থ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মেহেরপুর জেলা শিরোনামের বইটি রচনা করেছেন গাংনীর কথা সাহিত্যিক রফিকুর রশিদ রিজভী। বইটির প্রকাশক ওসমান গনি। বইটি আগামী প্রকাশনী হতে প্রথম প্রকাশিত ২০০৭ সালে। এ বইয়ে ২৭৬ পাতায় লিপিবদ্ধ করেন এবং পরিশিষ্ট ঘ ২৮৭ পাতাতে বলা হয়, মেহেরপুর জেলার স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তিদের ভূমিকা প্রসঙ্গে ৬ষ্ঠ লাইনে অবরুদ্ধ বাংলাদেশে অনেক মানুষ ইচ্ছার বিরুদ্ধেও এইসব অত্যাচারী বাহিনীতে নাম লেখাতে বাধ্য হয়েছে। নি¤েœর তালিকায় তাদের নামের পাশে তারকা চিহ্নিত হয়েছে উল্লেখ করে। মেহেরপুর জেলার শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা মেহেরপুর সদর থানা ক্রঃ নং১-৯৩ পর্যন্ত এবং গাংনী থানা ক্রঃ নং১-১১৫ পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করেন। গাংনী থানার শান্তি কমিটির সদস্যদের মধ্যে ক্রমিক ৯২ আব্দুল মান্নান, পিতা- এরশাদ আলী, আড়পাড়া উল্লেখ করেছেন। পূনঃ পরিশিষ্টর ৩০৫ পাতাতে স্টার চিহ্নিত ব্যক্তিদের রাজাকার পরিচয় নিয়ে এলাকায় ভিন্নমত আছে উল্লেখ করেছেন। তারা আরও দাবি করেন কোন যাছাই ব্যতীত, নিজ এলাকার মানুষ হিসেবে শত্রæতার কারণে অত্র প্রকারে আব্দুল মান্নান এর নাম স্টার চিহ্নিত করে লিখে মুদ্রণ এবং প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারি কোনো গেজেট বা জেলার সরকারি কোনো দপ্তর হতে আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে এধরনের কোন তথ্য প্রকাশ ব্যতীত মিথ্যা তথ্য সম্বলিত বই প্রকাশ করে মানহানি করেছেন। এই বইয়ের লেখায় প্রয়াত আব্দুল মান্নান পরিবার ব্যক্তি, সামাজিক ও পারিবাড়িক জীবনে সম্মানীহানি হয়েছে। অতএব আগামী ৭দিনের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে বইটির লেখকের উদ্দেশ্যে আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, বইটির লেখক রফিুকর রশিদের জন্ম তারিখ দেখে জানতে পারি আপনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কিশোর ছিলেন। তাহলে আপনি কিভাবে জানতে পারলেন যে আমার পিতা শান্তি কমিটিতে ছিলেন এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছিলেন। সবকিছু হচ্ছে আপনার দুষ্ট মস্তিকের দুষ্ট চিন্তা। আমাদের পরিচয়কে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিপ্রায়। আপনার কখনও মনে হয়নি প্রভাবশালী আওয়ামী পরিবারের সন্তান, একজন সমাজসেবী, মানবাধিকারী কর্মী, স্বচ্ছ ইমেজের ব্যক্তির বিরুদ্ধে যাচাই বাছাই না করে এমন মানহানীকর বিষয় উল্লেখ পূর্বক মূদ্রণ করে আমরা বা আমার পরিবারের উজ্জল রাজনৈতিক গুনাবলী ধ্বংস করার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করছেন যা কোন প্রকারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াত আব্দুল মান্নানের বড় ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেছুর রহমান মকুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।