দর্শনা কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনে একজনের প্রার্থীতা প্রত্যাহার : প্রতীক বরাদ্দ

দর্শনা অফিস: কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচন আগামী ১৪ মার্চ। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাক-জমকপূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে কেরুজ এলাকায়। সংগঠনগুলোতে শ্রমিক ভোটারদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে। শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে কেরুজ আঙিনা। শেষ করা হয়েছে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, যাচাই-বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দের পালা। ২ সভাপতি ও ৫ জন সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন জিল্লুর রহমান। শেষমেষ সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৪জনে। এবারের নির্বাচনে মাসুদ সংগঠনের সৌমিক হাসান রূপম অন্যত্র মিলে বদলিজনিত কারণে অংশ নিতে পারছেন না। তবে ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে দুজন প্রার্থী সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টিও আলোচনা বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে নির্বাচন বন্ধের পাঁয়তারা এখনো থামেনি। কুষ্টিয়া আঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তর থেকে চিঠি পাঠানো হলেও তা আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কঠোর পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে কেরুজ এলাকা। গতকাল রোববার ছিলো প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, জমা, যাচাই-বাছাই ও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এবারের নির্বাচনে ইউনিয়নের ২৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫৫ জন প্রার্থী। এ ভোটে ইউনিয়নের ৭টি ওয়ার্ডের সদস্য পদের জন্যও সমগ্র এলাকার ভোটারের ভোট দেয়ার বিধান করা হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হলেও কারো প্রার্থীতা বাতিল হয়নি। পরপরই প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। রাত ৮টার মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময় নির্ধারণ ছিলো। শেষ সময়ের মাত্র ২৩ মিনিট আগে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন জিল্লুর রহমান। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সবুজ (হারিকেন) ও তৈয়ব আলী (চাঁদতারা)। সাধারণ সম্পাদক পদে মনিরুল ইসলাম প্রিন্স (চাকা), হাফিজুর রহমান (চশমা) জয়নাল আবেদীন নফর (মই), আব্দুল মান্নান (ছাতা) ও জিল্লুর রহমান (বাইসাইকেল)। জিল্লুর রহমান তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়ায় সাধারণ সম্পাদক পদে মাঠে থাকলেন ৪ জন প্রার্থী। ২টি সহ-সভাপতি পদের বিপরীতে এএসএম কবির (মাছ), মফিজুল ইসলাম (চেয়ার), রেজাউল করিম (হাতপাখা) ও সাঈদ আহমেদ (কোদাল)। ২টি সহ-সাধারণ সম্পাদকের বিপরীতে মোস্তাফিজুর রহমান (গোলাপফুল), আব্দুল কুদ্দুস (টেবিল), ইসমাইল হোসেন (গরুর গাড়ী), খবির উদ্দিন (কলস) ও বাবুল আক্তার (তালাচাবী)। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আরিফুল ইসলাম আরুক (কাপ-পিরিস), মহিদুল ইসলাম (সিলিং ফ্যান) ও সেলিম খান (প্রজাপতি)। দপ্তর সম্পাদক পদে আতিয়ার রহমান (বই) ও সালাউদ্দিন সনেট (উড়োজাহাজ)। প্রচার সম্পাদক পদে মিজানুর রহমান (মোরগ) ও রবিউল ইসলাম (কুড়েঘর)। কোষাধ্যক্ষ পদে আবু সাঈদ (কাঠাল), রেজানুর রহমান (ট্রাক)। এছাড়া ৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে আক্তার খান (বাস), নুর আলী (গ্লাস) ও শাহবুদ্দিন (গোলটুপি)। ২নং ওয়ার্ডে আব্বাস উদ্দিন (হাঁস), আমিনুল ইসলাম (হাতঘড়ি) ও বাবর আলী (বেলচা)। ৩নং ওয়ার্ডে আব্দুস সালাম (টর্চলাইট), বাবুল আক্তার (গাভী), শফিকুল ইসলাম (বাঘ) ও শরিফুল ইসলাম (হারমুনিয়াম)। ৪নং ওয়ার্ডে আবু সিদ্দিক (আম), আসাদুজ্জামান (জগ) ও মতিয়ার রহমান (বাল্ব)। ৫ নং ওয়ার্ডে ফরহাদ হোসেন খান (ফ্রিজ), মাঈনুদ্দিন (মাইক), মাহামুনুল হাসান (তীর), সাঈফ উদ্দিন সুমন (ফুটবল), সাহেব আলী শিকদার (সেলাই মেশিন) ও হারেজুল ইসলাম (আপেল)। ৬নং ওয়ার্ডে আসাদুল হক ব্যাকা (তরমুজ), নুরুল ইসলাম (আখের আটি), মাজেদুল ইসলাম ডাবলু (কেটলি), মজিবর রহমান (টিউবওয়েল), মোহন আলী (ঢোল) ও মনিরুল ইসলাম ঝন্টু (কলা)। ৭নং ওয়ার্ডে আজাদ আলী (কলম), ইদ্রিস আলী (আলমারি), তারাপদ বিশ্বাস (লাটিম), জাহিদুল ইসলাম (ঢেকি) ও জহিরুল ইসলাম (হাতুড়ি)। চিনিকলের হিসাব, প্রসাশন ভান্ডার, স্বাস্থ্য বিধান, ইমারত, স্যানিটেশন, হাসপাতাল, চোলাই মদ কারখানা, ডিস্টিলারি, বিদ্যুত ও কারখানা, প্রকৌশলী, পরিবহন, ইক্ষু উন্নয়ন, ইক্ষু সংগ্রহ বিভাগ সহ বাণিজ্যিক খামারগুলো নিয়ে গঠিত ৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ১৪৭ জন। এবারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন মিলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) আব্দুছ ছাত্তার, সদস্য সচিব, চিনিকলের প্রকৌশলী (পরিবহন) আবু সাঈদ, সদস্য উপ-ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) আলআমিন, উপ-ব্যবস্থাপক (হিসাব) শেখ জাবেদ হাসান ও সম্প্রতি রাজশাহী চিনিকলে সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) ডিস্টিলারি জহির উদ্দিন বদলি হওয়ায় সেখানে নতুন করে নেয়া হয়েছে জুনিয়র অফিসার (ভূমি) আফজালুর রহমানকে। এদিকে নির্বাচন বন্ধের পাঁয়তারা থামেনি। গতকাল রোববার কুষ্টিয়া আঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তৌফিক হোসেন স্বাক্ষরিত ই-মেইল বার্তা পাঠানো হয় কেরুজ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে। তাতে নানা অভিযোগ উত্থাপন করা হলেও তা আলোচনা মাধ্যমে সমাধান করে ওই বার্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More