চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে রাস্তায় বাঁশ বসিয়ে ইউটার্ন বন্ধ : সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ
সংশ্লিষ্টদের দাবি ঈদ বাজারে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতেই এই ব্যবস্থা
স্টাফ রিপোর্টার: রোজা শুরুর দ্বিতীয় দিন থেকেই চুয়াডাঙ্গা শহরের পোস্ট অফিস ও নিউ মার্কেটের সামনের রাস্তার ইউটার্নে বাঁশ দিয়ে আটকে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ বাজারের সবচেয়ে বড় ইউটার্ন পয়েন্ট জনতা ফার্মেসির সামনে রয়েছে খোলা। এ নিয়ে পথচারী ও রাস্তার দুপাশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। বাঁশ লাগানো উদ্যোগের সাথে জড়িতরা বলছেন, ঈদ বাজারে রাস্তায় যানবাহন চলাচল নির্বিঘœ করতেই এই ব্যবস্থা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আসরের নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক সময়ের খ্যাতিমান ফুটবলার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল হক মালিক মুকুল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো রাস্তার মাঝখানে পারাপারের স্থানে বাঁশ দিয়ে বন্ধ করা নিয়ে তার মতামত। তিনি ক্ষোভের সাথে জানালেন, বিগত বছরগুলোতে ঈদের সপ্তাহখানেক আগে ইউটার্নে বাঁশ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলেও এবার আগেভাগে করা হয়েছে। এতে নারী, শিশু ও বয়স্কদের দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা কয়েকগুন বেড়েছে। রাস্তার প্রতিবন্ধকতা তুলে নেয়ার দাবি জানান তিনি।
একইভাবে চুয়াডাঙ্গা পোস্ট অফিসের পার্শ্ববর্তী মিষ্টি ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাতেগোনা কিছু মানুষের স্বার্থ দেখতে গিয়ে মিষ্টি ব্যবসায়ীসহ রাস্তার আশপাশের দোকানদারদের সমস্যায় ফেলেছে ইউটার্ন বন্ধের কাজটি। পোস্ট অফিসের সামনে ও নিউ মার্কেটের সামনে রাস্তার মাঝামাঝি যানবাহন পারাপার বন্ধে বাঁশ বেঁধে বন্ধ করা হলেও আড়তপট্টি হিসেবে পরিচিত অর্থাৎ জনতা ফার্মেসি, মবিল সেন্টারের সামনের রাস্তা কিন্তু খোলা। গতকাল রাত অবধি দিব্যি এপার ওপার করেছে যানবাহন। সাধারণ মানুষ বলছে ইর্মাজেন্সি রোডে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ রেখে অকারণে ট্রাক চলাচল ও আনলোডিং সুবিধার জন্য এই ক্রসিংটি খোলা রাখা হয়েছে। প্রতি বছর ঈদের কয়েকদিন আগে চুয়াডাঙ্গা শহরের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মাঝখানে বাঁশ বেধে দেয়া হয়। তবে এ বছর রোজার শুরুতেই এ ধরনের কাজ করায় অধিকাংশ মানুষই অসন্তুষ্ট, এটি তাদের সাথে কথা বলেই জানা গেলো। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, বাঁশ ব্যবহার করে রাস্তা বন্ধের আদেশ কে দিলো? বা কোন মিটিংয়ে এ ধরণের সিদ্ধান্ত হলো সেখানে কে কে উপস্থিত ছিলো ? চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল মামুনের সাথে এ বিষয়ে কথা বলা হলে তিনি এই ধরণের নির্দেশ দেননি বলে জানান। চুয়াডাঙ্গা ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক ওলিউজ্জামান অবশ্য বলছেন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে, বৈঠক করে ঈদের আগে সড়কে শৃঙ্খলা রাখতে বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার ট্রাফিক বিভাগকে সমর্থন করে পারাপারের রাস্তা বন্ধের পক্ষে বলেছেন। রাস্তার দুপাশের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার আগে তাদের মতামত নেয়া হয়নি। একক সিদ্ধান্তে রাস্তা বন্ধ করায় ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। তারা আরও জানান, চুয়াডাঙ্গার রাস্তায় চলাচল নিরাপদ করতে, দুর্ঘটনা কমাতে ঈদের আগে ট্রাফিক বিভাগ যেভাবে কাজ করে সেভাবেই করবে। প্রয়োজনে ইউটার্নে কয়েকদিনের জন্য ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করতে হবে। ভুক্তভোগীদের দাবি, অযথা বা কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইউটার্নের রাস্তা বন্ধ আবার ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিশেষের সুবিধার কথা ভেবে বা কোন সুপারিশে ব্যস্ত স্থানের রাস্তা খুলে রেখে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির বিষয়টি প্রশাসন দৃষ্টি দেবেন পাশপাশি রোজা রেখে ঈদের বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয়টিও সেই ভাবনায় যেনো থাকে।