লাবলু রহমান: ইন্টারনেট গোটা বিশ^কে বানিয়েছে গ্রাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশ^বাসীকে একান্নবর্তী পরিবারভুক্ত করেছে। এরই অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ি এলাকার একদল তরুণ ‘চুয়াডাঙ্গা পরিবার’ নামে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একিভূত হয়ে একের পর এক সামাজিক দায়িত্ব পালন করে চলেছে। চুয়াডাঙ্গা পরিবার’র নামক গ্রুপ খুলে একিভূত হওয়ার প্রথম বছর পূর্তি ছিলো গতকাল রোববার। এদিন পালন উপলক্ষে গুচ্ছ কর্মসূচি পালন করেছে উদ্যোগতা তরুণেরা।
চুয়াডাঙ্গার নেহালপুর ইউনিয়ন পরিষদ সম্মেলন কক্ষে গতকাল রোববার বিকেলে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ, আলোচনাসভাসহ সামাজিক দায়িত্বে নিয়োজিত এবং সফল ব্যক্তিদের মধ্যে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান। কেক কেটেও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন এলাকার কৃতিসন্তান চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. ফকির মোহাম্মদ, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি দৈনিক মাথাভাঙ্গা সম্পাদক সরদার আল আমিন, ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার, সদর উপজেলা পরিষদের সিইও ইসমাইল হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আইনাল হক, দর্শনা প্রেসক্লাব সভাপতি মনিরুজ্জামান ধিরু, সাধারণ সম্পাদক হারুন রাজু, সাংবাদিক সমিতি দর্শনা ইউনিটের সভাপতি আওয়াল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এএসএম ওসমান প্রমুখ। বড়শলুয়া নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মুকিত জোয়ার্দ্দার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের পূর্ণতা এনে দেন বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফয়জুর রহমান, তিতুদহ ইউপি সচিব জিয়াউর রহমান জিয়া, শঙ্করচন্দ্র ইউপি সচিব আসাবুল হক মাসুদ, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জামাত আলী, আবুল কাশেম প্রমুখ। হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লাবলু রহমান, চুয়াডাঙ্গা পরিবারের পরিচালকদের মধ্যে সাংবাদিক আব্দুস সামাদ অপূর্ব, এমএআর নয়ন, জহুরুল ইসলাম জনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ও হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ হাসান।
আয়োজকদের তরফে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা পরিবার নামক গ্রুপ যখন খোলা হয় তখন হাতে গোনা কয়েকজন থাকলেও এখন সদস্যের সংখ্যা ১৫ হাজার ছড়িয়ে গেছে। প্রতিদিনই সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। এ গ্রুপ খুলে প্রথম যে কাজটি করা হয়েছে তা হলো জরুরি প্রয়োজনে সদস্যদের মধ্য থেকে রক্ত নিয়ে মৃতপ্রায় রোগীর জীবন রক্ষা করা। এরপর মাঝে মাঝেই ক্বেরাত প্রতিযোগিতা। হামদ নাথ প্রতিযোগিতাসহ পুরষ্কার বিতরণ। এছাড়াও গ্রুপের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এতে বেশ ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার বক্তব্যে বলেন, চুয়াডাঙ্গা পরিবার জেলার অন্যতম ডিজিটাল প্লাটফর্ম। এর মাধ্যমে এলার মানুষের সুখ দুঃখ প্রকাশ পায়। এক বছর পূর্তির দিনে অর্থাৎ জন্মতিথিদে উদ্যোগতাদের প্রতি রইলো বিশেষ ভালবাসা। এ গ্রুপ শত শত বর্ষ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করুক। এটাই কামনা। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ডা. ফকির মোহাম্মদ বলেন, এলাকার তরুণ সমাজ ফেসবুকের মাধ্যমে একিভূত হয়েছে। এরা সমাজের সর্বস্তরের জন্য ভালো কাজ করলে আমাদের তরফে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে। বিশেষ অতিথি সরদার আল আমিন বলেন, পরিবর্তনের যুগ চলছে। দ্রুত বদলে যাচ্ছে সবকিছু। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে যুব সমাজকে যেমন এগিয়ে যেতে হবে, তেমনই সামাজিক দায়িত্বপালনের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া এলাকাকে তুলতে হবে উন্নয়নের শিখরে। সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারলেই গ্রুপ খুলে একিভূত হওয়া স্বার্থক হবে।
অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্ব শেষে অতিথিদের বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ