চুয়াডাঙ্গার চাঁদপুরে অজ্ঞাত পরিচয়ের বৃদ্ধার মৃত্যু
গড়াইটুপি প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার চাঁদপুর গ্রামের জোড়াতলা নামকস্থানে ৭০ বছর বয়সী অজ্ঞাত পরিচয়ের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে খাবার দিতে গেলে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের জানান। পরে গ্রামের লোকজন প্রশাসনকে জানালে দর্শনা থানা ও স্থানীয় তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থল উপস্থিত হন।
স্থানীয়রা জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গিরীশনগর বাজারে মাস খানেক আগে এই বৃদ্ধা মানুষের দ্বারে দ্বারে খাবার চেয়ে খেতেন। কথাবার্তা বলতেন না। দু একটা কথা বললেও তা বোঝা যেতো না। অন্যের দেয়া খাবার খেয়ে এবং বিভিন্ন জায়গায় তিনি রাতযাপন করতেন। গত কয়েকদিন ধরে পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর গ্রামের জোড়াতলা নামক স্থানে রাস্তার পাশে একটি স্থানে থাকতেন। নাম পরিচয়হীন ওই বৃদ্ধাকে আশপাশের লোকজন মাঝে মাঝে খাবার দিতো। গতপরশুদিন প্রতিবেশীরা তাকে গোসল করিয়ে পরিষ্কার করে। রাতে রাস্তার পাশেই ছিলেন। গতকাল বুধবার সকালের দিকে খাদিজা খাতুন নামের এক মহিলা তার খাবার দিতে গিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন। পরে বিষয়টি প্রতিবেশীদেরকে জানালে তারা প্রশাসনকে খবর দেয়। দর্শনা থানা থেকে এসআই হারুন ও স্থানীয় তিতুদহ ক্যাম্প ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) নুর হোসেন ঘটনাস্থলে যান। পরে লোকজনের মুখে বিস্তারিত শুনে তার দাফনকাজ করার অনুমতি দেন। গ্রামের জনৈক একব্যক্তি ওই বৃদ্ধা মহিলাকে হিন্দু আখ্যায়িত করে গ্রাম্য গোরস্থানে দাফন করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানামুখী বাক-বিতন্ডা শুরু হয়। সে মুসলিম নাকি হিন্দু? সন্দিহান হয়ে পড়েন অনেকেই। নাম পরিচয়হীন ওই বৃদ্ধার আচরণ দেখে স্থানীয় গিরীশনগর বাজারের অনেকেই হিন্দু বলে মনে করতেন। অন্যদিকে মুসলিম-হিন্দু তর্ক-বিতর্কে গোরস্থানে দাফন করতে অসম্মতির কথা উঠলে অনেকেই নিজের জমিতে দাফনকাজ করার জন্যও বলেন। অবশেষে সকলের সম্মতিতে গ্রাম্য কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। তিতুদহ ইউপি সচিব জিয়াউর রহমান ব্যক্তিগতভাবে ১ হাজার টাকা এবং গ্রামের লোকজন আরো কিছু টাকা-পয়সা তুলে তার দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন। এ বিষয়ে চাঁদপুর প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ১নং ওয়ার্ড সদস্য আজিজুল ইসলাম বলেন, মানুষের মতভেদ উপেক্ষা করে বাদ জোহর গ্রাম জামে মসজিদের ইমাম সাহেব জানাজা করান এবং গ্রাম্য কবরস্থানে তার দাফনকাজ করা হয়।