চুয়াডাঙ্গার এক লাখ ৪১ হাজার শিশু খাবে ভিটামিন ‘এ’
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা
স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সভাকক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ১২ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত চারদিন জেলার ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী এক লাখ ৪১ হাজার ২৭২ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাৎ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আওলিয়ার রহমান, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. সাজিদ হাসান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি প্রমুখ।
সভায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ভিটামিন ‘এ’ শুধুমাত্র অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকেই শিশুদের রক্ষা করে না, ভিটামিন এ-শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং গর্ভবতী-মাসহ শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বশীল।
বক্তারা বলেন, ভিটামিন ‘এ’ শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক অনুপুষ্টি।
কর্মশালায় জানানো হয়, আগামী ১২ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। চুয়াডাঙ্গায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১৭ হাজার শিশুকে নীল রঙের এবং এক থেকে ৫ বছর বয়সী ১ লাখ ২৪ হাজার ২৭২ শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জেলার ৮৯৬টি আউটরীচ টিকাদান কেন্দ্রে জেলার মোট এক লাখ ৪১ হাজার ২৭২ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় এক হাজার ৬শ’ শিশু নীল রঙের ও ১০ হাজার শিশু লাল রঙেরসহ সদর উপজেলায় মোট ৩ হাজার ৫২৬ শিশুকে নীল রঙের এবং ২৫ হাজার ২৪৪ শিশুকে লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৪ হাজার ৫২৩ শিশুকে নীল ৩৩ হাজার ৩০৫ শিশুকে লাল রঙের, দামুড়হুদা উপজেলায় ৩ হাজার ৬২৯ শিশুকে নীল, ২৬ হাজার ৬৯৬ শিশুকে লাল এবং জীবননগর উপজেলায় নীল রঙের ক্যাপসুল পাবে ২ হাজার ১শ শিশু ও লাল রঙের ক্যাপসুল পাবে ১৫ হাজার ৪৫২ শিশু।
সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাৎ হোসেন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভিটামিন বা আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পর মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। কিছুদিন আগেও আমাদের পাশ্ববর্তী এলাকায় আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পর স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয় বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো। প্রকৃতপক্ষে একটা আয়রন ট্যাবলেটের কারণে কারো মৃত্যু একেবারেই অসম্ভব। অন্যান্য রোগে আক্রান্ত থাকার কারণে মৃত্যু হতে পারে। তাছাড়া ভিটামিন বা আয়রন ট্যাবলেট সেবনে মৃত্যুর কোনো নজির নেই। তবে এ ধরণের সংবাদ প্রকাশিত হলে সাধারণ জনগণের মাঝে প্রভাব পড়ে। সেক্ষেত্রে প্রোগ্রাম সফল হতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এ ধরণের কোনো তথ্য পেলে সংবাদ প্রকাশের আগে অন্তত একটু স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কথা বলে নেবেন। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে বলে প্রকাশ করলেও জনসচেতনতা বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ক্যাম্পেইন সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন সিভিল সার্জন।