স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চোরকোল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। ওই গ্রামের এক ব্যক্তি নদী দখল করে পুকুর তৈরি করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে মাছ চাষ করছেন। ওই পুকুরের কারণে নদীর পানির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে বেরিয়ে আসা চিত্রা নদী ঝিনাইদহ সদর, কোটচাঁদপুর ও কালীগঞ্জ উপজেলা পেরিয়ে যশোরে প্রবেশ করেছে। এ নদী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চোরকোল ও কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে। চোরকোল গ্রামের নিচে নদীর উত্তরে বিশাল আকৃতির একটি পুকুর রয়েছে। যা দেখে বোঝা যায়, বেশির ভাগ অংশ নদীর মধ্যে।
সম্প্রতি চোরকোল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদীতে পাট ছাড়ানোর কাজ করছেন রুহুল আমিন। তিনি বলেন, গ্রামের বাসিন্দা মোফাজ্জেল হোসেন ওরফে পুটু মিয়া পুকুরটি অনেক দিন আগে কেটেছেন। তিনি এটি অন্যের কাছে ইজারা দেন, আবার কখনো নিজে মাছের চাষ করেন। মোফাজ্জেল হোসেন গ্রামের প্রভাবশালী। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তার পুকুরে কেউ হাত দেবেন না। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে অনেকে সাহস পান না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, পুকুরটির কারণে নদীর পানির গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। পুকুর যে স্থানে রয়েছে, সেখানে নদী বাঁকা হয়ে গেছে। পুকুরটির কারণে নদীর স্রোত কমে গেছে। পানি ওই স্থানে এসে বাধা পায়। ওই ব্যক্তি আরও বলেন, তারা পুকুরটির বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। তিনি এসে নদীর জায়গা মেপে পুকুরটি সরিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু পুকুর সরানো হয় না। যে কারণে এখন তারা আর প্রতিবাদ করেন না। তা ছাড়া অভিযোগ করলে কাজ হয় না, উল্টো প্রভাবশালীর রোষানলে পড়তে হয়।
এ বিষয়ে মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, তিনি এরশাদ সরকারের সময়ে পুকুর কেটেছেন। আজ পর্যন্ত কেউ (সরকারি কর্তৃপক্ষ) পুকুরটি সরাতে আসেনি। অনেকবার নদীর জায়গা মাপা হয়েছে; পুকুরের কিছু অংশ পড়েছে সরকারি জায়গায়। তারপরও পুকুর রয়েছে। এতোদিনেও যখন কেউ তার পুকুর সরাতে আসেনি, আর সরাবে না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে পুকুর সরিয়ে দিলে তিনি কোনো আপত্তি করবেন না।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শাহীন বলেন, নদীর জায়গা দখল করে পুকুর কাটার বিষয়টি তিনি জানেন না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ