স্টাফ রিপোর্টার: জেলা পরিষদ নির্বাচনে জিততে দুই সদস্য প্রার্থী ভোটারদের এক লাখ টাকা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই প্রার্থীই নির্বাচনে জিততে পারেননি। নির্বাচনে হেরে এখন ভোটারদের কাছে টাকা ফেরত নিতে তারা চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের (গাংনী উপজেলা) পরাজিত দুই সদস্য প্রার্থী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মজিরুল ইসলাম ও হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন অন্তত দুজন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও চারজন ইউপি সদস্য। গত সোমবার ওই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মজিরুল অটোরিকশা প্রতীক ও হাফিজুর তালা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। ভোট দেয়ার বিপরীতে টাকা নেয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কেউই নিজেদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তারা বলেন, নির্বাচনে জিততে মজিরুল ইসলাম ও হাফিজুর রহমান ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জোর করে এক লাখ টাকার বান্ডিল দিয়ে আসেন। ভোটে তারা দুজনই পরাজিত হয়েছেন। এখন তারা ওই টাকা ফেরত চাচ্ছেন। কিন্তু ভোটারদের অনেকে সেই টাকা ইতিমধ্যে খরচ করে ফেলেছেন। গাংনীর বামন্দী ইউপির চেয়ারম্যান কমল হোসেন বলেন, মজিরুল ও হাফিজুর একটি মাইক্রোবাসে করে সকাল থেকে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ভোটারদের কাছে গিয়েছেন। তাদের দেয়া টাকা ফেরত চেয়েছেন। টাকা ফেরত না দিলে বড় ধরনের অসুবিধা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা। ভোটারদের অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। যারা এসব অভিযোগ করছেন, তারা আমার বিরোধী পক্ষ।’ তবে তালা প্রতীকের প্রার্থী হাফিজুর রহমান দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর কয়েকটি ইউনিয়নের ভোটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন তিনি। সাক্ষাতে ভোটারদের ভোট দেয়া না দেয়া নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। ভোটাররা আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারা সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন কি না, সেটা জানতে গিয়েছিলেন তিনি। টাকা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে লাভ বলে কিছু নেই। সব লোকসান। নির্বাচনে লোকসান গুনতে হয়। আমিও তাই লোকসান গুনেছি।’ নির্বাচনে এক ইউপি সদস্য ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভোটের কয়েক দিন আগে মজিরুল ইসলাম ইউপি সদস্যদের কাছে দেনদরবার শুরু করেন। শেষে তিনি এক লাখ টাকা দেন। টাকা না নিলে সমস্যা হবে ভেবে অনেকে টাকা নিয়েছেন। নির্বাচনে হারার পর তিনি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা ফেরত চাচ্ছেন। এতে এলাকায় টাকা দেয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়েছে। ইউপি সদস্যদেরও মান ক্ষুণœ হচ্ছে। এলাকার চায়ের দোকানেও এখন টাকা নেয়া ও ফেরত চাওয়ার বিষয়টি আলোচিত। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু আনছার বলেন, নির্বাচনে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি আইনগত দ-নীয় অপরাধ। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।