কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি: এক লাখ টাকা দিয়ে জার্মান শেফার্ড জাতের কুকুর কিনেছিলেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের সেলিম রেজা নামের এক কৃষক। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার ভাই আলিম রেজা। মালিকের পাশ দিয়ে যাওয়া সাপের সঙ্গে লড়াই করে মারা গেছে কুকুরটি। তবে তার আগে সাপটিকে মেরে ফেলে প্রভুভক্ত কুকুরটি। বৃহস্পতিবার রাতে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলরামনগর গ্রামের পাশে আলুর ক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে কুকুরটি মারা যাওয়ায় সেলিম রেজার পরিবারে শোকের আবহ বিরাজ করছে। পরিবারের সবাই কান্নাকাটি করছে বলে জানা গেছে। সেলিম রেজা ও আলিম রেজা কোটচাঁদপুর উপজেলার বলরামনগর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। তারা পেশায় কৃষক।
সেলিম রেজা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তুলে রাখা আলু ও আলুর ক্ষেত পাহারা দিচ্ছিলেন দুই ভাই সেলিম রেজা ও আলিম রেজা। ক্ষেতের পাশে পাতা চৌকিতে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তারা। তাদের সঙ্গে ছিলো জার্মান শেফার্ড জাতের কুকুরটি। রাত ৯টার দিকে একটি সাপ ছুটে আসছিলো। এটি দেখতে পেয়েই কুকুরটি সাপের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি জানান, তার চোখের সামনে শুরু হয় সাপ ও কুকুরের মধ্যে লড়াই। কুকুরটি সাপকে কামড়ে মেরে ফেলে। তবে তার আগে কুকুরের নাকে কামড় দেয় বিষধর সাপটি। এতে নিস্তেজ হয়ে পড়ে কুকুরটি; পরে মারা যায়। কুকুরটিকে বাড়ি সামনে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। সাপ-কুকুরের মৃত্যুর খবরে কৌতুহলী মানুষ তা দেখতে এলাকায় ভিড় করে। তারা জানায়, কুকুর প্রভুভক্ত। জীবন দিয়ে তার প্রমাণ দিয়ে গেলো কুকুরটি।
সেলিম রেজা বলেন, জার্মান শেফার্ড জাতের ওই কুকুরকে ১ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন। সেটির নাম রাখেন টেডি। তিনি জানান, কুকুরটি তাদের পরিবারের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলো। শিশুদের সঙ্গে ছিলো খুব ভাব। অনেক সময় অনেক দুর্ঘটনা থেকে শিশুদের রক্ষা করে প্রভুভক্ত ওই প্রাণিটি। তিনি আরও জানান, শিশুরা পুকুরে গোসল করতে গেলে কুকুরটি পাড়ে শুয়ে থাকতো। সাঁতার কাটার সময় শিশুরা ডুবে যাওয়ার মতো হলেই কুকুরটি পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে পাড়ে তুলে আনতো। একদিন তার ছেলেকে মোটরসাইকেলের চাপা পড়া থেকে রক্ষা করেছিলো টেডি।
সেলিম রেজা জানান, সবার প্রিয় কুকুরটির মৃত্যুতে পরিবারের সবাই শোকাহত। সবাই খুব কান্নাকাটি করছে।