খাইরুজ্জামান সেতু: অধিক লাভের প্রত্যাশায় দর্শনা কেরুজ বাংলামদ বোতলজাত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় আপাতত বাজারজাত করতে দেখা দিয়েছে আইনি জটিলতা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র মিললেই তবে বাজারজাত করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। ফলে আগ পিছ না ভেবে আইনি বিষয়গুলো না দেখে তড়িঘড়ি করে বাংলামদ বোতলজাত করায় লোকসানের বোঝা ভারী হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, দর্শনা কেরুজ চিনিকল কম্পেলেক্সটি জেলার একমাত্র ভারী চিনিশিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি চিনি উৎপাদনের পাশাপাশি উৎপাদন করে করে বিলেতি মদ এবং বাংলামদ। বিলেতি মদ পিইটি বোতলে এবং বাংলামদ ড্রামে করে বিক্রয় করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলা (সিএস) মদ বোতলজাত করে বিক্রি করার উদ্যোগ গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। সে লক্ষ্যে ১৫ টাকা পিচ হিসেবে ১ হাজার এ.এল ও ৫শ এম.এল মিলে ৪০ হাজার বোতল ক্রয় করে কর্তৃপক্ষ। ১০ নভেম্বর ২০২৪ কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের আবেদনের পরিপেক্ষিতে ২৬ নভেম্বর ২০২৪ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট মন্ত্রাণালয় প্রশাসন শাখার পরিচালক (প্রশাসন, অর্থ ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ মামুন মিয়া দেশিমদ বোতলজাত করার অনুমোদন প্রদান করেন। তারই আলোকে বাজারজাত করার লক্ষ্যে বোতলে ভরা হয়েছে বাংলামদ। ১২ জানুয়ারি ২০২৫ একই দপ্তরের একই কর্মকর্তা শর্তজুড়ে দেন, পরিবেশ বান্ধব বোতলের ধরণ নির্ধারণে (প্লাস্টিক/কাঁচ) প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র/অনুমোদন নিতে হবে বলে নির্দেশ প্রদান করেন। তবে বোতলজাত করা হলেও বিভাগীয় কার্যালয় খুলনা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আহসানুর রহমানের গত ১২ জানুয়ারি পত্র মারফত জানান, কেরুজ বাংলামদ বোতলজাত করতে হলে বোটলিং লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া আপাতত বোতলজাত করা বাংলামদ বাজারজাত করতে পারবে না কেরুজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে আইনি বিষয়গুলো না ভেবে তড়িঘড়ি করে বাংলামদ বোতলজাত করায় বোতল, কর্ক, লেবেল এবং শ্রমিক দিয়ে বোতলজাত করায় লোকসানের বোঝা ভারী হবে বলে সচেতনমহল মনে করছে। অনেকেই মন্তব্য করে বলছেন, কেরুজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ ভালো ছিলো; তবে আইনি ব্যাখ্যাটি জানা এবং তার অনুমোদন নিয়ে উৎপাদনে গেলে আজকের এ সমস্যায় পড়তে হতো না চিনিকল কর্তৃপক্ষকে। এটি অদক্ষতা এবং অদুরদর্শিতা ছাড়া কিছুই না। কান্ট্রি লিকার বোতলজাত বাস্তবায়ন করা কমিটির এক নম্বর সদস্য কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মুহাম্মদ আব্দুস ছাত্তার ও ৩নং সদস্য কেরু এন্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) ডিস্টিলারি আব্দুল হালিম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। দেশি মদের বোটলিং লাইসেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন, এমন নির্দেশনার বিষয়ে আমার জানা নেই। চিঠিপত্র দেখে তারপরে বলতে পারবো। আর ডিস্টিলারির বিষয়ে কথা বলা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.