দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু শারদীয় দুর্গোৎসব : আজ মহাসপ্তমী

ঢাকের তালে শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনি উৎসবে মাতবে পুরো সনাতনী গোষ্ঠী
স্টাফ রিপোর্টার: ম-পে ম-পে বোধনের মাধ্যমে দেবী দুর্গার আহ্বান করা হচ্ছে মর্ত্যলোকে। এরই মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। গতকাল শুক্রবার মহাষষ্ঠী দিয়ে শুরু হওয়া দুর্গোৎসব আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এবার চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১২১টি ও মেহেরপুরে ৪৩টি পূজা ম-পে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব। উৎসব নির্বিঘœ করতে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ মহাসপ্তমী। ভোরে হয়েছে ‘কলাবউ’ স্নান। নবপত্রিকা প্রবেশের পর অনুষ্ঠিত হবে সপ্তমীবিহীত পূজা। চাউর আছে সপ্তমীর মূল আনুষ্ঠানিকতাই হচ্ছে নবপত্রিকা প্রবেশ। মূলত ব্রহ্মণী (কলা), কালিকা (কচু), দুর্গা (হলুদ), কার্ত্তিকী (জয়ন্তী), শিব (কৎবেল), রক্তদন্তিকা (ডালিম), শোকরহিতা (অশোক), চামু-া (ঘটকচু), লক্ষ্মী (ধান) এই ৯টি উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি করা হয় নবপত্রিকা। যা দেবী দুর্গার ৯টি শক্তির প্রতীক। যাদের একত্রিত করে নবপত্রিকা রূপে শস্যদেবীর পূজা করা হয়। এই শস্য বধূকেই দেবীর প্রতীক রূপে গ্রহণ করে প্রথমে পূজা করা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। এদিনই চক্ষুদানের মধ্যদিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় দেবীর মৃন্ময়ীতে। শাস্ত্রমতে-মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে (১৬ উপাদানে) দুর্গাদেবীর পূজা করা হয়। একই সঙ্গে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য ও চন্দন দিয়ে পূজা করা হয়। পূজা শেষে দেবী দুর্গার চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেবেন ভক্তরা। ঢাকের তালে, মন্ত্র ও চ-ীপাঠ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে মন্দিরে মন্দিরে উৎসবে মাতবে পুরো সনাতনী গোষ্ঠী। আগামীকাল অষ্টমী তিথিতে নির্জলা উপবাস থেকে মন্দিরে মন্দিরে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দিবে। হবে সন্ধীপূজা। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগজ্জননীর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে হবে ‘কুমারী পূজা’। শাস্ত্রমতে, এদিন পূজিত কুমারী কন্যার নামকরণ করা হয় ‘উমা’। ভক্তদের মতে, এটি একাধারে ঈশ্বরের উপাসনা, মানববন্দনা আর নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা।
জানা গেছে, ম-পে ম-পে সন্ধ্যা ৬টায় বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা শেষ হয়েছে। এছাড়া ম-পে ম-পে শুরু হয়েছে চ-ীপাঠ। সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী এবার দেবী দুর্গার আগমন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে, যার ফল খুব একটা শুভ নয়। শাস্ত্র অনুযায়ী দেবীর ঘোড়ায় আগমন ছত্রভঙ্গের ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া দেবীর গমনও রয়েছে ঘোটকে। যার ফলও শুভ বার্তা দিচ্ছে না। আজ শনিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে থেকে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে। আগামীকাল রোববার মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে এবং শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টা ১১ মিনিটের মধ্যে। সোমবার সকাল ৯টার পর শুরু হবে মহানবমী পূজা। পরদিন মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর মহাদশমী পূজা শুরু হবে। দশমী পূজার পর অনুষ্ঠিত হবে পুষ্পাঞ্জলি।
সরজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকেই দেবী দর্শনে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। সারি সারি বাঁশ বেঁধে নির্ধারণ করা হয়েছে নারী-পুরুষের পৃথক প্রবেশদ্বার। মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ-আনসারসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মন্দিরে আগত চুমকি বিশ্বাস বলেন, আমরা পুরো একটা বছর অপেক্ষায় থাকি এদিনগুলোর জন্য। একে অপরের আনন্দ ভাগাভাগি করার মধ্যদিয়ে পূজার দিনগুলো কখন কেটে যায় টেরই পাই না। সব থেকে বেশি মজা হয় অষ্টমীর দিন সকালে অঞ্জলি দেয়া ও দশমীতে সিঁদুর খেলায়। পূজাকে ঘিরে নিজের ও আপনজনদের জন্য নতুন পোশাক কেনা-কাটাও কম আনন্দের না। চুয়াডাঙ্গায় জেলায় এবার ১২১টি পুজা ম-পে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৩৩টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩৯টি, দামুড়হুদা উপজেলার ২২টি ও জীবননগর উপজেলায় হলো ২৭টি। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৩৩টি হলো; তালতলা ষষ্ঠিতলা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, তালতলা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, ইসলামপাড়া সত্য সনাতন বারওয়ারী দুর্গা মন্দির, মালোপাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গা উৎসব ও কালী মন্দির, বেলগাছি শ্রী শ্রী শীব দুর্গা মন্দির, কুলচারা দাসপাড়া শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গা মন্দির, আলুকদিয়া দাসপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়া বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণ মাঠপাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, বোয়ালমারী সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা ও কালী মন্দির, মোমিনপুর সার্বজনীন কালী মন্দির, সরিষাডাঙ্গা সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা ও কালী মন্দির, হাসনহাটি সার্বজনীন রাধা গোবিন্দ ও দুর্গা মন্দির, সিন্দুরিয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বোয়ালিয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, ফুলবাড়ী সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, সরোজগঞ্জ কাছারিপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, নেহালপুর সার্বজনীন পূজাম-প, বোয়ালিয়া সার্বজনীন পূজাম-প, কুন্দিপুর সার্বজনীন পূজাম-প, ৬৩নং আড়িয়া শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ দুর্গা মন্দির, বলদিয়া বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, খেজুরা হালদারপাড়া সার্বজনীন পূজাম-প, ধুতুরহাট দাসপাড়া সার্বজনীন পূজাম-প, খাড়াগোদা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, গড়াইটুপি পালপাড়া দুর্গা মন্দির, গড়াইটুপি মিস্ত্রিপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, তেঘরি মিস্ত্রিপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, গহেরপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বাটিকাডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ও কুকিয়া চাঁদপুর বারোয়ারী পূজাম-প।
আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩৯টি হলো; আলমডাঙ্গা রথতলা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কলেজপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, বাবুপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, স্টেশনপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ক্যানালপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, গোবিন্দপুর হরিতলা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, আনন্দধাম দাসপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কলেজপাড়া শিব বাবুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বন্ডবিল শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, আনন্দধাম সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বালক সংঘ ক্যানালপাড়া দুর্গা মন্দির, আনন্দধাম পশ্চিমপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, গোবিন্দপুর মাঠপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কালিদাসপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, নান্দবার শ্রী শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ দুর্গা মন্দির, নান্দবার বাবুপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, হারদী আর্য্য শ্রী শ্রী মন্দির, খাসকররা দাসপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, খাসকররা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, রায়লক্ষ্মীপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ঘোলদাড়ী শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ছয়ঘরিয়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, আইলহাস শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, মুন্সিগঞ্জ শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, গড়গড়ি শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, পুটিমারী শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, খুদিয়াখালী যুব সংঘ শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ধোলাইগঞ্জ মুন্সিগঞ্জ শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, বেতবাড়ীয়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কুমারী শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, জামজামি শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কুলপালা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ভালাইপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, বকশিপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, আঠারখাদা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির ও নতিডাঙ্গা কাচিকাটা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির।
দামুড়হুদা উপজেলার ২২টি হলো; বিষ্ণুপুর সার্বজনীন মন্দির, গোপালপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কালীয়াবকরী শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ মন্দির, ছুটিপুর দাসপাড়া শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দির, কার্পাসডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, কুড়ালগাছি বাজারপাড়া পূজামন্দির, চন্ডিপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, পারকৃষ্ণপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, ডুগডুগি সার্বজনীন রাধাগোবিন্দ দুর্গা মন্দির, ছোট দুধপাতিলা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, জয়রামপুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ মন্দির, দামুড়হুদা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, দামুড়হুদা দাসপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, পুড়াপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, চিৎলা হালদার সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, গোবিন্দহুদা দাসপাড়া রাধাকৃষ্ণ মন্দির, জগন্নাথপুর শ্রী শ্রী কৃষ্ণ রায় ঠাকুর মন্দির, দর্শনা পুরাতন বাজার সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গামাতা মন্দির, কেরুজ সার্বজীনন জয় দুর্গা মন্দির, কালীদাসপুর আদিবাসীপাড়া কালী মন্দির কালীদাসপুর দাসপাড়া সার্বজনীন শ্রী শ্রী রাধামাধব মন্দির।
জীবননগর উপজেলার ২৭টি হলো; দৌলৎগঞ্জ শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ^রী কালি মন্দির, জীবননগর শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, সুবলপুর শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা ম-প, শাখারিয়া দাসপাড়া শ্রী শ্রী শিব কালী মন্দির, শাখারিয়া আদিবাসীপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা ম-প, পেয়ারতলা শ্রী শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ পূজাম-প, মনোহারপুর পালপাড়া, শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা মন্দির, মনোহারপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, মনোহারপুর আদিবাসীপাড়া শ্রী শ্রী কৃষ্ণ মন্দির, সিংনগর শ্রী শ্রী হালদারপাড়া পূজাম-প, শিয়ালমারী শ্রী শ্রী আদিবাসীপাড়া দুর্গা মন্দির, সেনেরহুদা শ্রী শ্রী দাসপাড়া পূজাম-প, উথলী শ্রী শ্রী দাসপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, উথলী কর্মকারপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, দেহাটি শ্রী শ্রী পালপাড়া পূজাম-প, হোটি শ্রী শ্রী অন্নপূর্ণা পূজা ম-প, কাশিপুর শ্রী শ্রী হালদারপাড়া পূজা ম-প, সুটিয়া শ্রী শ্রী মহাদেব পূজাম-প, পাথিলা শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা ম-প, মাধবপুর শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা ম-প, শ্রী শ্রী মুক্তিপাড়া দুর্গাপূজা ম-প, বকুন্ডিয়া শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা ম-প, রায়পুর শ্রী শ্রী কালি মন্দির দুর্গাপূজা ম-প, বারুইপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা ম-প, কামারপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, বাজদিয়া শ্রী শ্রী সরদারপাড়া দুর্গা মন্দির ও নিশ্চিন্তপুর শ্রী শ্রী হালদারপাড়া দুর্গা মন্দির।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার রাত ৯ টায় দর্শনায় কেন্দ্রীয় পূজা ম-পে মঙ্গল প্রদীপ প্রজল্লন করে দেবীর আবাহন ও অধিবাস শুরু হলো মাহা ষষ্টির মধ্যে দিয়ে। দর্শনা কেন্দ্রীয় পুরাতন বাজার পূজা মন্দিরে জাকজমকপূর্ণ ও কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে পূজা। প্রদীপ প্রজল্লন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, দামুড়হুদা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক উত্তম রঞ্জন কুমার দেবনাথ, দর্শনা পুরাতন বাজার পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি মিল্টন কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক প্রন্ত রঞ্জন দেবনাথ, অন্তত কুমার সান্তারা, দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হানিফ মন্ডল, সাংবাদিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আহসান হাবীব মামুন, দর্শনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আওয়াল হোসেন প্রমুখ
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা ও পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন পূজা ম-প পরিদর্শন করেন। এ সময় প্রশাসনের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পূজা ম-প কমিটির কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উৎসবের আমেজে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করার জন্য পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দদের আহ্বান জানান। কোনো প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসকসহ পুলিশ প্রশাসনকে জানানো জন্য বলা হয়। জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ, এএসপি (দামুড়হুদা) সার্কেল জাকিয়া ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াসিন, জীবননগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ জীবননগর উপজেলা শাখার সভাপতি রমেন বিশ^াস, সাধারণ সম্পাদক সাগর কুমার বিশ^াস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জীবননগর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সাংবাদিক নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক, সদস্য সচিব জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যাবদ কুমার প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি বিজয় হালদার প্রমুখ এসময় সঙ্গে ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে টিমটি উপজেলার শিয়ালমারী দুর্গা ম-প, মনোহরপুর আদিবাসী দুর্গা মন্দির, মনোহরপুর পালপাড়া মন্দির, মনোহরপুর রাধা-গোবিন্দ মন্দির, দৌলৎগঞ্জ প্রাইমারী স্কুলপাড়া সার্বজনিন দুর্গা মন্দির ও দৌলৎগঞ্জ সিদ্ধেশ^রী কালি মন্দির পরিদর্শন করেন।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে: ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে গতকাল শুক্রবার শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের। মেহেরপুর জেলায় এবার মোট ৪৩ মন্দিরে দুর্গাপূজা ম-প তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে মেহেরপুর পৌর এলাকায় ৫টি মন্দিরে পূজা ম-প তৈরি হয়েছে। এগুলো হলো শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, নায়েববাড়ি মন্দির, হরিসভা মন্দির, বকুলতলা পূজা মন্দির, এবং হরিজন বালক পূজা মন্দির। মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৯টি মন্দিরে মন্ডপ তৈরি হয়েছে। এগুলো হলো গোভীপুর বায়পাড়া দূর্গা ম-প, গোভীপুর দাসপাড়া দুর্গাপূজা, আমঝুপি রাধারাম মন্দির, রাধের শ্যাম মন্দির, বাড়াদি দাসপাড়া মন্দির, বামনপাড়া সর্বজনীন কালী মন্দির, পিরোজপুর দূর্গা মন্দির, পিরোজপুর কালীমাতা দাসপাড়া মন্দির ও গহরপুর দাসপাড়া মন্দির।
মুজিবনগর উপজেলা ৭টি পূজা ম-প তৈরি হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মহাজনপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বাবুপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, কোমরপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, মোনাখালী পূজা ম-প, রতনপুর দাসপাড়া পূজা ম-প, বল্লভপুর পূজা ম-প ও দারিয়াপুর পূজা ম-প। অপরদিকে গাংনীতে ২২ মন্দিরে পূজা ম-প তৈরি হয়েছে। এগুলো হলো গাংনী কেন্দ্রীয় মন্দির, কেন্দ্রীয় রাম মন্দির, চৌগাছা দাসপাড়া কালী মন্দির, গাড়াডব দাসপাড়া কালী মন্দির, কুচইখালি যুগিন্দা দুর্গা মন্দির, হাড়িয়াদহ সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, আমতলী দাসপাড়া কালী মন্দির, ষোলটাকা কর্মকারপাড়া দুর্গা মন্দির, ষোলটাকা দাসপাড়া কালী মন্দির, বামুন্দি কোলপাড়া কালী মন্দির, মোটমুড়া হালদারপাড়া কালী মন্দির, বেতবারিয়া দাসপাড়া কালী মন্দির, ভোমরদা দাসপাড়া কালী মন্দির, হিজলবাড়িয়া দাসপাড়া কালী মন্দির, শিমুলতলা দাসপাড়া কালী মন্দির, মোহাম্মদপুর দাসপাড়া কালী মন্দির, ভোলাডাঙ্গা দাসপাড়া কালী মন্দির, বাউট দাসপাড়া কালী মন্দির, চাঁদপুর দাসপাড়া কালী মন্দির, কসবা দাসপাড়া কালী মন্দির, নিত্যানন্দপুর হরি মন্দির ও রায়পুর দাসপাড়া কালী মন্দির। এদিকে শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৩ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদর দপ্তর অপারেশন শাখার নির্দেশনা অনুযায়ী মেহেরপুর জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় কর্তৃক ১৯ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৬ দিনব্যাপী ৩টি উপজেলার ৪৩ টি পূজাম-পে নিরাপত্তা বিধানে আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন সম্পন্ন হয়েছে।
পুলিশের পাশাপাশি আনসার ভিডিপি’র ২৬৮ জন সদস্য-সদস্যা ম-পে উপস্থিত থেকে স্ট্যাটিক দায়িত্ব পালন করবেন। পূজাম-পসমূহকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ এই তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে প্রতিটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ম-পে ১ জন পিসি, ১ জন এপিসি, ৪ জন আনসার-ভিডিপি (পুরুষ) ও ২ জন মহিলাসহ ৮ জন; গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ ম-পে ১ জন এপিসি, ৩ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য (পুরুষ) ও ২ জন মহিলা সদস্যসহ ৬ জন করে লাঠিসহ মোতায়েন রয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৩ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদর দপ্তর অপারেশন শাখার নির্দেশনা অনুযায়ী মেহেরপুর জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় কর্তৃক ১৯ থেকেন ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৬ দিন ব্যাপী ৩টি উপজেলার ৪৩ টি পূজাম-পে নিরাপত্তা বিধানে আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন সম্পন্ন হয়েছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More