জীবননগরে এ বছর ধানের ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা

বোরো ধান কাটার শ্রমিক সংকটে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলায় শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার মহোৎসব। এবছর ধানের ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা। মাঠের সব ধান একই সময়ে পেকে গেছে। এ কারণে ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ধান কাটা ও মাড়ায় করার জন্য কৃষকরা ঠিকমতো শ্রমিক পাচ্ছেন না। ধান কাটতে জীবননগর উপজেলায় এবার শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বৈরি আবহাওয়া শুরু হওয়ার আগেই কৃষকরা তাদের ধান ঘরে তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু যথাসময়ে শ্রমিক না পাওয়ার কারণে ধান ঘরে তুলতে বিলম্ব হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা তাদের মজুরি আগের তুলনায় ১০০-২০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেক শ্রমিক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফসলের মাঠে ও কৃষকের বাড়িতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন। এতে একজন শ্রমিক প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা আয় করছেন। জীবননগর উপজেলার উথলী, রায়পুর, আন্দুলবাড়ীয়া, হাসাদাহ, মনোহরপুর ও সিংনগর গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা বোরো ধান কাটার মহোৎসবে মেতে উঠেছে। কেউ আবার ধানের আটি বাঁধছে, কাউকে ধানের বোঝা মাথায় করে বহন করতে দেখা গেছে। অনেক মাঠের ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। মৃগমারী গ্রামের ধান চাষি তারিক হোসেন বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। ধানের ফলন এবার অনেক ভালো হয়েছে। ধান ৫-৬দিন আগেই কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু শ্রমিক না পাওয়ার কারণে এতোদিন ধান কাটতে পারেনি। আবার ৪০০ টাকার মজুরি এখন ৫০০ টাকা চাচ্ছে। শ্রমিক না পেয়ে আজ আমি, আমার ছেলের সাথে নিয়ে ধান কাটতে এসেছি। সেনেরহুদা গ্রামের ধান চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, ধান কাটা ও মাড়ায় করার জন্য এখন খুব ভালো আবহাওয়া যাচ্ছে। এ মাসের শেষের দিকে আবার বৃষ্টি হতে পারে। যার কারণে তাড়াতাড়ি ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছি। এখানকার ধান কাটার শ্রমিকরা খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। তিনদিন পরে ধান কেটে দেবার কথা রয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিবাদল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আরেক ধান চাষি মোমিন হোসেন বলেন, আমার দুই বিঘা জমিতে এবার ধান খুবই ভালো হয়েছে। মাঠের সব ধান এক সাথে কাটা শুরু হয়েছে। যার কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আর কয়েকটা দিন যদি আবহাওয়া এমন থাকে তাহলে ধান ঘরে তুলে নিতে পারবো। আগামী ১০ দিনের মধ্যে অনেকের ধান ঘরে উঠে যাবে তখন আর শ্রমিক সংকট থাকবে না। জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সেখানে ৬ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হয়েছে। জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাসের বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেলে ধান কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More